নাটোর অফিস॥
ঝড়ে বিধ্বস্ত হওয়ার তিন সপ্তাহ পর বসবাসের জন্য নতুন টিনশেডের ঘর পেলেন নাটোরের গুরুদাসপুরের সেই ভ্যানচালক আনন্দ দাস(৬৪)। ডাঃ মোঃ আমিরুল ইসলামের আর্থিক সহায়তায় তাঁর ‘ইচ্ছেপূরণ’ টিমের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে নির্মিত ঘরটি বুধবার (৭ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামে আনন্দ দাসের বাড়ি। ভ্যান চালিয়ে তিনি সংসার চালান। আড়াই শতক জায়গার ওপর টিনের ঘর তুলে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। গত ১৬ মের সন্ধ্যায় কালবৈশাখীতে একমাত্র থাকার ঘরটি ভেঙেপড়ে। তবে আর্থিক সংকটের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ ঘরটি মেরামত করতে পারেননি তিনি। ফলে স্ত্রী দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ পাঁচ সদস্য নিয়ে কষ্টে বসবাস করছিলেন আনন্দ দাস।
নতুর ঘর পেয়ে ডাঃ মোঃ আমিরুল ইসলামের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ভ্যানচালক আনন্দদাস বলেন, ভ্যানচালিয়ে দিনে ৩০০-৪০০ টাকা আয় হয়। এই টাকায় সংসার চালানো কঠিন। এছাড়া তাঁদের তিন ছেলেমেয়ে বিদ্যালয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে ঝড়ে বিধ্বস্ত একমাত্র থাকার ঘরটি সংস্কার করার সামর্থ্য ছিলনা তাঁর। এজন্য ৫০ হাজার টাকার প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে মানবিক ডাক্তার পাশে দাঁড়িয়েছিল।
আনন্দদাসের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কারন সম্পর্কে ডাঃ মোঃ আমিরুল ইসলাম সাগর বলেন, আনন্দ দাসের খবর পেয়েছিলেন তার এলাকা থেকে। তার এমন করুন পরিস্থিতির গল্প তাঁর হৃদয় ছুঁয়েছিল। কারন একটিমাত্র ঘরে ছেলেমেয়ে নিয়ে পরিবারটি অমানবিকভাবে বসবাস করছিলেন। দায়ত্ববোধের জায়গা থেকে অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
এজন্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে তাঁর। এটাকায় সাড়ে ১৪ হাত বাই ১০ হাতের একটি টিনের ঘর নির্মান করা হয়েছে। সরকারি অনুদানের ১৬পিস টিনের সাথে আরো ৩৪ পিস নতুন টিন, মটকা, সিমেন্টের খুঁটিসহ প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ দিয়ে ছয়দিন ধরে ঘরটি নির্মান করে বুধবার হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ‘ ইচ্ছেপূরণ’ টিমের সদস্যরা একাজটি বাস্তবায়ন করেছে।
‘ইচ্ছেপূরণ টিম’ সম্পর্কে ডাঃ মোঃ আমিরুল ইসলাম সাগর বলেন,‘ সমাজের অসহায় ও বঞ্চিত মানুষের জন্য কিছু একটা করার চেষ্টা থেকেই ৫ বছর আগে ‘ইচ্ছেপূরন টিম’ গঠন করেন তিনি।স্বেচ্ছাসেবী ৯জন তরুণ এদলে কাজ করছেন। নেপথ্যে থেকে আর্থিক সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
ইচ্ছেপূরণটিমের মাধ্যমে হতদরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে চোখের অপারেশন,পঙ্গুদের হুইলচেয়ার গরিবমেধাবী শিক্ষার্থীদের বাইসাইকেল, বিনামুল্যে চিকিৎসা ও অপারেশন সুবিধাসহ মানবিক নানা কর্মকতান্ড পরিচালিত হয়ে থাকে। পেশাগত দায়বদ্ধতা, মানবিকতা ও দেশপ্রেম থেকে সাধ্যমত একাজগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।