নাটোর অফিস ॥
নাটোর থেকে ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়া সাড়ে ৪ কোটি টাকার বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ করার কাজে ব্যবহৃত লুন্ঠিত বিভিন্ন ভারী সরঞ্জামসহ ৮ ডাকাত সদস্যকে কুমিল্লায় গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় ডাকাতির মালামালসহ গ্রেফতারকৃত ডাকাতদলের সদস্যদের নাটোরে নিয়ে আসা হয়। নাটোর সদর উপজেলার দিয়ার সাতুরিয়া এলাকায় স্থাপিত ট্রান্সরেল লাইটিং লিমিটেড নামে ভারতীয় কোম্পাণীর ডিপো (প্রজেক্ট) ম্যানেজার ভারতীয় নাগরিক সুফল ঘোষ ২৪ মে নাটোর সদর থানায় ডাকাতি সংক্রান্ত একটি এজাহার দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা থেকে ওই চার ডাকাতকে গ্রেফতারসহ দুই ট্রাক ভর্তি লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করে। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ওই দুটি ট্রাক জব্দ করা হয়।
নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানান, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানী অব বাংলাদেশ এর অধিনে রুপপুর হতে বগুডার ৪০০ কেবি সিঙ্গেল সার্কিট ট্রানমিশন লাইনের কাজ করছে ’ ট্রান্সরেল লাইটিং লিমিটেড নামে ভারতীয় একটি কোম্পাণী। নাটোর সদর উপজেলার হয়বতপুর দিয়াার সাতুরিয়া গ্রামে ট্রান্সরেল লাইটিং লিমিটেডের একটি ডিপো আছে। গত ২৩ মে রাতে দিয়ার সাতুরিয়া এলাকার বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) প্রজেক্ট শেয়ারার ইন্ডিয়ান ট্রান্সরেইল লিমিটেড এর ওয়ার হাউজের সিকিউরিটি গার্ডদের মারধর করে দুটি ট্রাকে করে ৪ কোটি ৬৬লাখ ৫৯ হাজার ৪৪৭ টাকার বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ করার কাজে ব্যবহৃত টাওয়ার, পার্টস, লোহার রডসহ মুল্রবান সরঞ্জামাদি
ডাকাতি করে নিয়ে যায়। মুখে মাস্কপড়া ১০/১২ জনের একদল ডাকাত রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ডিপোতে প্রবেশ করে। তারা ষ্টোর রুমে থাকা সিসি ক্যামেরার হার্ডডিক্স, কম্পিউটার ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে সিকিউরিটি গার্ডদের এলোপাথারী মারপিট করে এবং তাদের হাত পা বেধে স্টোরের অফিস রুমে ফেলে রাখে। এসময় ডাকাতরা সিকিউরিটি গার্ডদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং তাদের পোষাক খুলে নিয়ে ডাকাতরা সেই পোশাক পড়ে ডাকাতি শুরু করে। একপর্যায়ে ডাকাতদের একজন মোবাইল ফোনে তাদের অন্য সহযোগীদের খবর দিলে রাত্র অনুমান সাড়ে ১১টার দিকে ডাকাতদলের আরো প্রায় ১৫/১৬ জন ডাকাত দুটি ট্রাক সহ ডিপো এলাকায় এসে ডিপোর মেইন গেটের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় ডাকাতরা ডিপোতে থাকা মালামাল দুই ট্রাকে বোঝাই করে। পরে মালামাল সহ
ট্রাক দুটি নিয়ে ডাকাতদল চলে যায়। পর দিন ২৪ মে কোম্পাণীর প্রজেক্ট ম্যানেজার ভারতীয় নাগরিক সুফল ঘোষ নাটোর সদর থানায় এ ঘটনায় একটি এজাহার দায়ের করেন। ওই এজাহার দায়েরের পর পুলিশ অভিযানে নামে। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ডিএমপি ডিবি টিম কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে চেকপোস্ট করা কালে উক্ত ডাকাতির মালামাল সহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত গাড়ি দুটি ওই সড়ক পার হয়েছে। পরে নাটোর
পুলিশ কুমিল্লার ডিবি টিমের সহযোগিতায় ডাকাতদলের লোকেশন ট্যাগ করে কুমিল্লা থেকে লুন্ঠিত মালামাল বোঝাই ২টি ট্রাক উদ্ধার সহ ৮ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরো জানান, ডাকাতির সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।