নাইমুর রহমান, লালপুর ঘুরে
উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে জেলহত্যা দিবসের সভার আয়োজন করেছিলো দলের লালপুর উপজেলা কমিটি। আয়েজনটি ছিলো আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। তবে শেষ পর্যন্ত আলোচনা সভা জনসভায় রুপ নিয়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয়ে শেষ হলো।
সভাশেষে প্রধান অতিথি ও নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল কালাম জানালেন, প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মানুষ যোগ দিয়েছেন আলোচনা সভায় যদিও অপর নির্বাচনী এলাকা বাগাতিপাড়ায় পৃথক ৬টি স্থানে উপজেলা কমিটি তার পক্ষে একযোগে কর্মসূচীটি পালন করেছে।
শনিবার বিকেলে লালপুর বাজারের ত্রিমোহনী মোড়ে দিবসটির শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভাস্থলের পাশে একটি খাবার দোকানের সত্বাধিকারী বলছিলেন লালপুরে আগে ও এখন আওয়ামী লীগের সমাবেশের কথা। তার মতে, ২০১৩ সালের নির্বাচনের আগেও প্রয়াত মন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান পটল লালপুর বাজারে এলে আওয়ামী লীগের কর্মীদের খুঁজে পাওয়া যেত না, যদিও তারাই রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলো। সে সময় যারা সাংসদ ছিলেন, তারাই বিরোধীদলকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল পরোক্ষভাবে।
‘কোনদিন আওয়ামী লীগের কোন সাংসদের নেতৃত্বে এই ত্রিমোহনী মোড়ে এতো বড় সমাবেশ হতে পারে এটি ধারণা করতে পারেনি অনেকেই। সেটাই এমপি কালাম করে দেখালেন’, জানালেন চংধূপইল থেকে আসা দলীয় কর্মী সাত্তার ও জসিম।
আলোচনা সভায় আগত নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিলো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে উদ্দীপনা। নির্বাচনের তফশীল ও দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার আগে সমাবেশটি হল বলে নেতাকর্মীরাও আগ্রহে ছিলেন। সেই সাথে দলের কতিপয় নেতার সাংসদ বিরোধীদের তৎপরতা নিয়েও সোচ্চার ছিলেন বক্তারা।
বক্তৃতায় অংশ নিয়ে লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফিরোজ আল হক ভুঁইয়া বলেন, সাংসদ কালামের বিরুদ্ধে কতিপয় নেতা এখনও ষড়যন্ত্র করছেন। এই জনসমুদ্র তো নতুন নয়, পুরাতন। এটি দেখার পরও সাংসদকে ‘জনবিচ্ছিন্ন’ বললে তাদের জনগণ কি বলবে?
সাবেক ছাত্রনেতা বাবুল আকতার হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, নৌকার ভোট যারা অপপ্রচার করে নষ্ট করছে, তাদের চিহ্নিত করা হবে। বিএনপিও এখন সমালোচনার ইস্যু পায় না অথচ অপপ্রচার করে নিজ দলের লোকজন।
উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ইসাহাক আলী বলেন, সাংসদ কালাম জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন বলেই উপজেলার সবকয়টি ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। এবার সময় এসেছে সবাই মিলে সাংসদ কালামকে পুনরায় নির্বাচিত করা।
সভাপতির বক্তৃতায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু বলেন, বিগত সাড়ে ৪ বছরের যাত্রায় সাংসদ কালাম অনেক বিঘ্ন অতিক্রম করেছেন তবুও থেমে যাননি। লালপুর-বাগাতিপাড়াবাসীর কল্যানে তিনি আত্ননিয়োগ করেছেন। এখন তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে। নৌকার পক্ষে, এমপি কালামের পক্ষে রায় দিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন ভবিষ্যতে। দলের যারা ক্ষতি করছে, দল সময়মতো তাদের জবাবদিহি করাবে।
আপ্লুতকন্ঠে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন সাংসদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়ে গেছেন, বেঈমানি করেননি। এ শিক্ষা ধারণ করে রাজনীতি করা উচিত।
২০১৪ গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাবার মুহূর্তকে স্মরণ করে বলেন, মনোনয়ন চাইতে ঢাকা তদবীর করতে হয়নি। এলাকায় থেকে দলকে সংগঠিত করেছি শুধু। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেছে নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে লালপুর-বাগাতিপাড়ার নেতাকর্মীদের কাছে মনে হয় এতোটা ঋণী ছিলাম না, যতটা এখন আছি। নির্বাচিত হবার পর তারা সবসময় পাশে থেকে আমাকে ঋণী করেছেন। সংসদ হিসেবে যেতে না পারলেও দলীয় প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ। তাদের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ।
ভোটারদের উদ্দেশ্য সাংসদ বলেন, নৌকার পক্ষে আগামীতেও আপনাদের রায় চাই। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করুন।