নাটোর অফিস॥
নাটোরের সিংড়ার বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাত বান্ডিল ঢেউটিন সভাপতির ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে লাগিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মহান মে দিবসের ছুটির দিনে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাবুল হোসেন কাউকেও না জানিয়ে টিনগুলো নিয়ে তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে রাতারাতি লাগান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এনিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির অন্যান্য সদস্য ও এলাকাবাসীর মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ওই প্রতিষ্ঠানের পুরোনো সাত বান্ডিল ঢেউটিন বিদ্যালয়ের ষ্টোর রুম থেকে উধাও। আর এনিয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী ও স্থানীয়দের মধ্যে বেশ গুঞ্জন চলছে।
তখন বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠানের দপ্তরী কাম পহরী আল মামুনের সাথে কথা বলে জানা যায়, টিনগুলো মে দিবসের ছুটির দিনে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাবুল হোসেন তার বাড়ির একটি অনুষ্ঠানের জন্য নিয়ে গেছেন। আর অনুষ্ঠান শেষ হলে টিনগুলো আবার ফিরিয়ে দিবেন। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সভাপতি তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান একটি স্থানীয় মাদ্রাসায় টিনগুলো রাতারাতি লাগিয়ে ফেলেছেন। আর এনিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইয়ে।
এবিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা ও আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠানের কোন টিন বিক্রি বা কাউকেও ব্যবহার জন্য দেয়ার বিষয়টি তাদের জানা নেই। শুনেছেন টিনগুলো সভাপতি নিয়ে গেছেন। আর এনিয়ে এলাকায় সমালোচনা চলছে বলে জানান তারা।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য রমেন ঠাকুর বলেন, সরকারি বিদ্যালয় থেকে ঢেউটিন উধাও এটা খুব দুঃখজনক বিষয়। তাছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক বলে ওই বিদ্যালয়ের কোন বিষয়ে তাকে আর ডাকাও হয় না বলেও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
এবিষয়ে বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের ষ্টোর রুমে পুরোনো সাত বান্ডিল ঢেউটিন ছিল। টিনগুলো তাকে না জানিয়েই ছুটির দিন সভাপতি সাহেব নিয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি কিছুই জানেন না।
তবে পরে বিষয়টি শুনেছেন। সভাপতির মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাবুল হোসেন মােবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, টিনগুলো তিনি তার একটি মাদ্রাসার কাজে লাগিয়েছেন। আর এজন্য বিদ্যালয়ের ফান্ডে টাকাও দিয়ে দিবেন। তবে কাউকেও না জানিয়ে ছুটির দিনে কেন টিনগুলো নিয়ে গেলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা যখন লাখ লাখ টাকা খরচ করে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করি তখন তো কিছু লেখেন না। আর কয়েকটা টিন নিয়ে গেছি এটা নিয়ে লেখার জন্য চলে এসেছেন। পরে অবশ্য টিনগুলো এভাবে নিয়ে যাওয়া তার ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলী আশরাফ বলেন, এই ধরণের ঘটনায় কোন ছাড় দেওয়া হবে না। বিষয়টি জেনে দ্যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।