নাটোর অফিস ॥
কয়েকদিনের তীব্র তাপাদহের পর নাটোরে স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে। তবে এই বৃষ্টি অনেকের কাছে স্বস্তির হলেও কৃষকরা পড়েছেন দুঃচিন্তায়। বুধবার বিকেলে জেলার সাত উপজেলার ওপর দিয়ে কাল বৈশাখী ঝড়ের সাথে শিলা বৃষ্টিও হয়। এত করে আম,লিচু, ভুট্টা, গম ও ধানসহ উঠতি ফসলের ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা। বিশেষ করে বাগাতিপাড়া ও সদর উপজেলার ওপর দিয়ে ঝড়ের সাথে শিলা বৃষ্টি হয়। এই কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে এই দুই উপজেলায় বোরে ধান ও আম ঝড়ে পড়েছে। এছাড়া ভুট্টা ও ধান গাছ ন্যুইয়ে পড়েছে। বিকেলে হঠাৎ করেই কালো মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে যায় আকাশ। এর কিছুক্ষণ পর থেকে শুরু হয় ঝড় ও শিলা বৃষ্টি । প্রায় ঘন্টাব্যাপী শিলা বৃষ্টির সাথে দমকা ও ঝড়ো বাতাস বয়ে যায়। স্থানীয় কৃষি বিভাগ ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে মাঠে নেমেছ্।ে কৃষ্ িবিভাগের মতে সদর ও বাগাতিপাড়া উপজেলা শিলা বৃষ্টি হলেও অন্যন্য উপজেলা দমকা হাওয়া ও ¯বস্তির বৃষ্টি হয়েছে। বুধবারের এই বৃষ্টিতে জেলায় পাটসহ গ্রীষ্ণকালিন ফসলের উপকার হবে। আমের ঝড়ে পড়াও রোধ হবে। এছাড়া নিচে নেমে যাওয়া পানির লেয়ারের কিছুটা উপকার হবে।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, তাদের বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে মাত্র। আগামি সপ্তাহে পুরোদমে ধান কেটে ঘরে তুলবেন তারা। কিন্তু এই ঝড় বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় মাটিতে হেলে পড়েছে পাকা ধান। অনেক স্থানে ঝরে গেছে গাছের ধান। আম চাষীরা জানান, শিলা বৃষ্টিতে উপজেলার অধিকাংশ বাগানের আম পড়ে গেছে। এছাড়া শিলার আঘাত লাগায় অনেক গাছের আম নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
বাগাতিপাড়া উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের কৃষক রফিক বলেন, তার ১০০টি কলা গাছ উপড়ে পড়েছে। একই উপজেলার পৌর এলাকার গাজীজুনর রহমান বলেন,তার ৫বিঘা জমির পাকা ধান শিলা বৃষ্টিতে ঝড়ে পড়েছে। আকতার হোসেন নামে এক আমচাষী জানান, তার ১০ বিঘা আয়তনের আম বাগানের সব আম ঝড়ে পড়েছে। কৃষক বজলুর রহমান জানান,তমালতলা এলাকায় তার জমিতে প্রায় শত বছর বয়সী একটি পাইকৈড়গাছ ঝড়ে উপড়ে গেছে। অপর এক কৃষক জানান, তার ভুট্টা ক্ষেতের ভুট্টা গাছ ন্যুইয়ে পড়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ওবায়দুল হক জানান, ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে প্রাথমিকভাবে বাগাতিপাড়ায় ক্ষতির পরিমান বেশী হওয়ার স¤ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে মাঠ কর্মীরা ক্ষতি নিরুপন করতে মাঠে কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মোট ক্ষতির পরিমান জানা যাবে। তবে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাকে ক্ষতির পরিমান সহনিয় পর্যায় হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে যেসব জমিতে পানি জমেছে তা সরিয়ে ফেলা সহ ন্যুইয়ে পড়া গাছের পরিচর্যার বিষয় কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ন্যুইয়ে পড়া ধান দ্রুত কেটে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। এই বৃষ্টিতে জমির উপকার হবে। এছাড়া পাটসহ গ্রীষ্ণকালীন সবজির উপকার হবে। অপরদিকে আম ঝড়ে পড়া রোধ হবে।