নাটোর অফিস॥
ঈদ অনুষ্ঠানে দাওয়াত না করায় নাটোরের সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য এমদাদুল হক বাবলু (৬৬) কে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দিয়েছে প্রতিপক্ষ স্থানীয় চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। আর এই ঘটনায় আরো ৬ আ’লীগ কর্মী আহত হয়েছে। আহতরা সবাই চেয়ারম্যানের বিপক্ষের। শনিবার ঈদের দিন বাদ মাগরিব উপজেলার কলম ইউনিয়নের নুরপুর বাজারে ঈদ আনন্দর একটি অনুষ্ঠান শেষে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এদিকে এই ঘটনায় আহতের খবর শুনে সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি। অপরদিকে ২৩ এপ্রিল রোববার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান ও ঊপজেলা আওয়ামিলীগ সদস্য মইনুল হক চুনুকে প্রধান আসামী করে ২১ জনের নাম উল্লেখ এবং ১১ জন অজ্ঞাত সহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন আহত আ’লীগ নেতার ছোট ভাই এনামুল হক জগলু।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানাযায়,উপজেলার কলম ইউনিয়নের নূরপুর-কৃষ্ণপুর স্কুল মাঠে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে স্থানীয়ভাবে খেলাধুলার আয়োজন করেন এলাকাবাসী। আর সেই খেলাধুলার নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য এমদাদুল হক বাবলু। কিন্তু অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যানকে দাওয়াত না করায় দু’পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও ধাক্কা-ধাক্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট করার কথা তুলে মারধর শুরু করেন বিজয়ী (বিদ্রোহী) ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতেই তার লোকজন। এতে আ’লীগ নেতা এমদাদুল হক বাবলু ও স্থানীয়্য ব্যবসায়ী, শিক্ষক সহ ৬ আ’লীগ কর্মী আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের মধ্যে তিনজনকে রামেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আহত অন্যরা হলেন আসাদুজ্জামান ভুট্রু (৩৭), হিরা (৩৭), কাজল হোসেন (৩৬), সেলিম (৩২), আলেক খান (৪২),মনিরুজ্জামান মিন্টু (৩০)। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আহতদের মধ্যে আ’লীগ নেতা এমদাদুল হক বাবলুকে রামেক হাসপাতালের অর্থপেথিক বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, আহতদের মধ্যে আ’লীগ নেতা এমদাদুল হক বাবলু সহ তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) পাঠানো হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. ওহিদুর রহমান শেখ বলেন, দোষীদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়েছে। হামলার সাথে জরিতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে কলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মইনুল হক চুনু বলেন, ছেলে-পেলেদেরধাক্কা-ধাক্কি থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। এখানে নৌকার ভোটের কোনপ্রভাব নেই। ঘটানাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন বলে স্বীকার করেন।
সিংড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন,এই ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১১ জন সহ ৩২ জনের নামে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। আসামিদের ধরতে এলাকায় অভিযান চলছে।