নাটোর অফিস॥
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর গ্রামের চতুর্থ শ্রেনীতে পড়–য়া শিশু শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন (১১) হত্যায় জড়িত আব্দুল্লার ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকালে খুবজীপুর অব্দুল হামিদ কমপ্লেক্স চত্তরে সহপাঠি,স্বজন ও এলাকাবাসী এসব কর্মসুচি পালন করেন।
গত ১৫ এপ্রিল ভ্যান ছিনতাই করতে গিয়ে ইসমাইল হোসেনকে শ^াসরোধ করে খুন করে আব্দুল্লাহ। শিশু ইসমাইল খুবজীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী ও আনিসুর রহমানের ছেলে। অভিযুক্ত মো. আব্দুল্লাহ (২৪) একই ইউনিয়নের শ্রীপুর দিয়ারপাড়া গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে।
বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে উপস্থিত নিহত শিশু ইসমাইলের মা বিউটি বেগম,বাবা আনিসুর রহমান,দাদি ছবিরন বিবি কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মোহসিন আলী,আইনুল মেম্বার,শাহিনুর রহমান,বুলবুল কাজী,নজরুল ইসলাম,মিজানুর রহমান প্রমুখ। এসময় তারা ইসমাইলের নির্মম হত্যায় জড়িত খুনি আব্দুল্লাহর ফাঁসি দাবী করেন।
বাসায় বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় পাশর্^বর্তী আনন্দ নগর মহল্লায় নানা বাড়ীতে চার্জে থাকা ভ্যান আনতে ছেলে ইসমাইল হোসেনকে পাঠান দরিদ্র ভ্যানচালক ইসমাইল। রাস্তায় অধিক ভাড়ার প্রলোভনে তাড়াশ উপজেলায় যাবার কথা বলে ওই ভ্যানে যাত্রী হয়ে উঠেন শ্রীপুর দিয়ার পাড়া গ্রামের খুনি মো.আব্দুল্লাহ (২৪)। এরপর তাড়াশ-কুন্দইল আঞ্চলিক সড়কের দীঘি সগুনা নামক এলাকায় নিয়ে গিয়ে শিশু ইসমাইলের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যা করে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায় খুনি আব্দুল্লাহ।
তাড়াশ উপজেলার কাস্তা এলাকায় ভ্যানটি বিক্রি করতে গেলে তার কথাবার্তায় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিলের মাধ্যমে তাড়াশ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ স্বীকার করে সে ইসমাইলকে হত্যা করে তার ভ্যান ছিনিয়ে নিয়ে বোরো ধানের জমিতে মরদেহ লুকিয়ে রেখেছে। পরে রাত ১১টার দিকে পার্শ্ববর্তী তাড়াশ থানার দীঘি সগুনা এলাকায় একটি বোরো ধানের জমি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে তাড়াশ থানার পুলিশ। পরদিন ইসমাইলের বাবা আনিছুর রহমান থানায় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মমিনুর রহমান খান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল্লাহ শিশু ইসমাইলকে হত্যার দায় শিকার করে। তার দেয়া তথ্যমতে ধানক্ষেত থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ধারনা করা হচ্ছে ভ্যান ছিনতায়ের উদ্দেশ্যেই খুন করা হয়েছে ইসমাইলকে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে দ্রুততম সময়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।