নাটোর অফিস॥
দেশের সবচেয়ে উষ্ণ ও কমবৃষ্টিপাতের এলাকা হিসেবে পরিচিত নাটোরের লালপুর উপজেলার ওপর দিয়ে গত কয়েক দিন ধরে বয়ে যাচ্ছে তীব্র দাবদাহ। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৈশাখের কাঠ ফাটা রোদ্দুর ও গরমে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে রোজাদাররা। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১২ টা ১৫ মিনিটের দিকে লালপুর উপজেলার মোহরকায় ডিগ্রী কলেজ মাঠে বৃষ্টি কামনা করে নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ আদায় শেষে আল্লাহর কাছে বিশেষ দোয়া করেছেন মুসল্লিরা। কলেজ মাঠে খোলা আকাশের নিচে নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মুফতি তরিকুল ইসলাম। স্থানীয় মোহরকায়া ভিলেজ ফাউন্ডেশন মোহরকায়া ডিগ্রী কলেজ মাঠে ইস্তিসকার সালাতের আয়োজন করে। এলাকাবাসীরা এ নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি বা পানির জন্য প্রার্থনা করেন। সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে পাবনার ঈশ্বরদীতে।
নাম শেষে মুফতি তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘তীব্র খরতাপ ও ভ্যাপসা গরমে রোজাদারদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। হাহাকার পরে গেছে বৃষ্টির জন্য। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষ পানির জন্য হাহাকার করছে। আল্লাহ সালাতের মাধ্যমে বৃষ্টি বা পানির জন্য দোয়া চাইতে বলেছেন। তাই আমরা সবাই একত্র হয়ে এ নামাজ আদায় করেছি। এ নামাজকে বলা হয় ‘ইসতিসকার নামাজ। ’
আয়োজক ডা. ইসমোত হেসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় এই অঞ্চলের প্রায় নলকূপে দেখা দিয়েছে পানি সঙ্কট। বাড়ির নলকূপ গুলোতে ২০-২৫ বার চেপেও এক গ্লাস পানি বের হচ্ছে না। টানা তীব্র দাবদাহে ও গরমে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে রোজাদাররা। তীব্র খরায় গাছ ও প্রাণিকুল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সূর্যের তীব্র তাপদাহে পুড়ছে মানুষ, এছাড়া গবাদি পশু, সবুজ প্রকৃতি ও ফসলের ক্ষেতও। রুক্ষ আবহাওয়ায় গাছের পাতাও যেন নড়ছে না। বৈশাখের তীব্র খরায় ঘরে-বাইরে কোথাও ছিটেফোঁটা স্বস্তি নেই। একটু বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে এই অঞ্চলে। শ্রমজীবী মানুষ রোদে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা বৃষ্টির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনার আয়োজন করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গরমে ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। আমরা মহান আল্লাহর দরবারে একটু প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়েছি। আল্লাহ আমাদের কবুল করুক।’