নাটোর অফিস॥
নাটোরে একই এলাকায় বিএনপির চলমান অবস্থান কর্মসচী পালন ও আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশকে ঘিরে রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শনিবার দুপুরে শহরের আলাইপুর এলাকায় বিএনপি কার্যালয়ে আসার সময় বিএনপি অফিস সংলগ্ন পশ্চিম আলাইপুর জামে মসজিদের সামনে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ আবুলকে রক্তাক্ত জখম করা হয়। বিএনপি নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা তার ওপর চড়াও হয়ে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়। ঘটনার সময় বিএনপির নেতা কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে অবস্থান করছিলেন। এছাড়া বিপুল সংখ্যক পুলিশও অবস্থান করছিল। পরে বিএনপি কর্মীরা গুরুতর ও রক্তাক্ত জখম অবস্থায় বিএনপি নেতা ফয়সাল আহমেদ আবুলকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে বিএনপি কার্যালয়ের অদূরে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শান্তি সমাবেশ পালনের সময় কিছু দূরে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করেছে সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল ও জেলা আওয়ামী লীগের অনুসারীরা।
জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাশিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার নেতৃত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের অর্ধশত অনুসারী মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা সহকারে বিএনপি কার্যালয় সংলগ্ন বিদ্যুৎসঞ্চালন অফিসের সামনে অস্থান নেয়। এখানে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে পুনরায় মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা সহকারে শহরের দিকে চলে যায়। এদিকে প্রায় একই সময়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মী বিএনপি কার্যালয়ের অদুরে সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। সেখানে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা প্রায় ঘন্টাব্যাপী অবস্থান নিলেও আর কোন ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি। আওয়ামীলীগ সেখানে বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে শান্তি সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান,যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তুজা আলী বাবলু, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মালেক শেখ,পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল প্রমুখ।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন বলেন, শনিবার বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচী ছিলে বিকেল ৩ টা থেকে। আওয়ামী লীগ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পাল্টা সমাবেশ ডেকেছে জেনে বেলা ২ টা থেকে বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করার কথা ছিলো। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা পুলিশের উপস্থিতিতে লাঠিসোটা নিয়ে বিএনপি অফিসের সামনে আসে। এসময় তারা দলীয় কর্মসুচীতে অংশ নিতে আসা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ফয়সাল আলম আবুলকে দেখে তেড়ে গিয়ে তাকে কুপিয়ে এবং লাঠি ও হকিষ্টিক দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এরপর অফিসের অদূরে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করে। দেওয়ান শাহিন অভিযোগ করে বলেন,এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান করলেও তাদের সামনেই আবুলের ওপর হামলা চালানো হয়। তারা প্রকাশ্যে লাঠি-শোটা ও হকিষ্টিক উঁচিয়ে চলাচল করলেও পুলিশ নিরব ছিল ।
জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তুজা আলী বাবলু বিএনপির অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও মিথ্যাচার দাবী করে বলেন, আওয়ামী লীগের কেউ বিএনপি নেতাদের উপর হামলা করেনি। বিএনপির নেতারা কার্যালয়ের গেটে তালা লাগিয়ে ভেতরে বসে ছিল। তারা নিজেরাই কোপাকুপি করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর দোষ চাপাচ্ছে। ইতিপুর্বে বিএনপি গুলি চালিয়ে শান্তিপুর্ন পরিবেশকে যেভাবে অশান্ত করেছে,আমারা সেসব বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিচার চেয়েছি। শান্তি সমাবেশ করে তাদের বিচার দাবি করেছি। তাদের দৃষ্টান্তমুল বিচার না হলে জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদ বলেন, এলাকায় দু’পক্ষের কর্মসুচীর জন্য উত্তেজনা থাকলেও পুলিশ সর্তক অবস্থানে ছিল। পুলিশি অবস্থান এলাকায় কারো ওপর হামলার ঘটনা ঘটেনি। শান্তিপুর্ন পরিবেশ বজায় ছিল।