নাটোর অফিস ॥
নাটোরে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চুসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার রাতে ঢাকা যাওয়ার পথে র্যাব সদস্যরা টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে শহিদুল ইসলাম বাচ্চুকে গ্রেফতার করে। অপরদিকে একই মামলায় এনএস সরকারী কলেজের সাবেক জিএস জহির উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে দু’জনকেই নাটোর সদর থানায় হস্তান্তর করার পর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গত শনিবার সদর থানায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলা ও গুলিবর্ষণের মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে একই মামলায় গত রোববার তেবাড়িয়া এলাকা থেকে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আলম আবুলকে তেবাড়িয়ার তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে এঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন কেন্দ্রিয় বিএনপির সাংগাঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদ বাচ্চু সহ দুই জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওসি আরো জানান, গত ২ এপ্রিল রোববার দুপুরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিউন হোসেন বাদি হয়ে নাটোর সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চুকে প্রধান আসামি করে ২৬ জনের নাম উল্লেখ সহ আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। পরে রোববার বিকেলে পুলিশ শহরের ফৌজদারিপাড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চুর লাইসেন্স করা পিস্তল জব্দ করে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াতের অব্যাহত দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতার বিরুদ্ধে নাটোর পৌর আওয়ামী লীগের শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের কান্দিভিটুয়া দলীয় কার্যালয় থেকে এক শান্তি মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপুর্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আলাইপুর এলাকার উপশহর মাঠে যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে বাধা দেয়। পরে সেখানেই সমাবেশ করার সময় বিএনপির ভারপ্রপ্ত আহবায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চু সমাবেশ লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এছাড়া বিএনপির অন্য নেতাকর্মীরা লোহার
রড, চাইনিস কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব ও শহর যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সায়েম হোসেন উজ্বলসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ১ এপ্রিল জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে বিএনপির অবস্থান কর্মসুচী চলার সময় সরকারী দলের কর্মীরা হামলা চালালে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় পিস্তল উঁচিয়ে গুলি ছোড়েন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু। ওই পিস্তল উঁচিয়ে বাচ্চুর গুলি ছোড়ার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাল হয়। ওই ঘটনার পর পরদিন রোববার বিকেলে বিএনপির নেতার শহরের ফৌজদারিপাড়ার বাসা থেকে তার নামে নিবন্ধিত পিস্তলটি পুলিশ জব্দ করে। অবস্থান কর্মসুচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে কেন্দ্রিয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস দুলু বক্তৃতা করছিলেন। এসময় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এই সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে প্রায় ৪০ জন করে আহত হওয়ার দাবি করা হয়েছিল।