নাটোর অফিস॥
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা সৃষ্টিতে কাজ করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে এই লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প সফলভাবে বাস্তবায়নের পর একটি নতুন রূপকল্প দিয়েছেন তা’ হচ্ছে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মান করতে হবে। আর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মান হবে চারটি মুল স্তম্ভের উপর। তা’ হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ব্যবস্থা ও স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা। এ চারটি স্তম্ভের সমন্বয়ে গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক হবে আজকের যারা ছাত্র-ছাত্রী তারাই। তারাই ২০৪১ সালে বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিবে তারাই।
আজ নাটোরের সিংড়াতে ছয়তলা ভিতবিশিষ্ট চারতলা একাডেমিক ভবন, ছয়তলা ভিতবিশিষ্ট তিনতলা ডরমেটরি ভবন এবং প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপাল কোয়ার্টারসহ দেড় একর জায়গার উপরে অবকাঠামো উন্নয়নসহ সিংড়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী পলক এসব কথা বলেন। গণপূর্ত বিভাগ ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন এই প্রাতিষ্ঠানিক ভবন নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে।
‘থাকবো ভালো, রাখব ভাল দেশ, বৈধ পথে প্রবাসী আয়-গড়ব বাংলাদেশ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে জনশক্তি,কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি’র সভাপতিত্বে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী আারও বলেন, স্বাধীনতার পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে জননেত্রী শেখ হাসিনা বিগত ১৪ বছরে প্রযুক্তি নির্ভর সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছেন। দেশের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় ১৩ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সাড়ে আট হাজার ডিজিটাল সেন্টারে প্রতিমাসে এক কোটি জনগোষ্ঠি দুই হাজার রকমের সেবা গ্রহন করছেন। নাগরিক সেবায় চালু করা হয়েছে ‘৯৯৯’সহ বিভিন্ন হটলাইন। ‘লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের অধীনে ৫৩ হাজার ফ্রিল্যান্সার তৈরী করা হয়েছে। দেশে সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছেন।
পলক আরো বলেন, দেশের এক কোটি জনগোষ্ঠি প্রবাস থেকে বছরে ২২ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়ে আমাদের দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছেন। প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্যে সরকার কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করে দিয়েছে। কারিগরি দক্ষতা অর্জন এবং ভাষার দক্ষতা অর্জন করে বিদেশে গেলে প্রবাসীরা আরো বেশী অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
সিংড়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে ছয়টি ট্রেডে প্রতিবছর এক হাজার ২০০ শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহন করে দক্ষ হয়ে উঠবেন। বিদেশে যেতে ইচ্ছুকদের ওরিয়েন্টেশনও প্রদান করা হবে এই কেন্দ্রে। এছাড়া প্রায় তিনশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে সিংড়াতে ১৫ একর জায়গার উপরে নির্মিতব্য এবং নির্মিত ডিজিটাল সিটির চারটি স্থাপনায় আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী পলক।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘৪০ উপজেলায় ৪০ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সাইফুল হক চৌধুরী, নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ , পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান, সিংড়া পৌরসভার মেয়র মোঃ জান্নাতুল ফেরদৌস,ইইপ চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবিব রুবেল প্রমুখ।