নাটোর অফিস॥
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এক রাতে একই মহল্লার ৫ বাড়িতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বাগাতিপাড়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষণহাটী মহল্লায় এই ঘটনা ঘটে। মহল্লা বাসিদের দাবি, শুধু ওই রাতেই নয় গত কয়েক রাত ধরেই ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে। এতে বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও মহল্লাবাসীর মধ্যে আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের ধারনা পরিকল্পিতভাবে কেউ অথবা কোন একটি চক্র এই ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারে। মহল্লাবাসীদের সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ওই মহল্লার শফিকুল ইসলামের ছেলে সবুজ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে বেরিয়ে তার বাড়ির উত্তরে আগুন দেখে চিৎকার চেঁচামেচি করেন। পরে স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় আগুন নেভানো হয়। এরপর সবাই নিজ নিজ বাড়িতে গিয়ে শোবার প্রস্তুতি নিতে থাকার সময় একই পাড়ার জপরের ছেলে জহুরুলের শয়ন কক্ষের খড়ের বেড়ায় জ্বলন্ত আগুন দেখে জহুরুল চিৎকার দেয়। পরে আশে-পাশের বাড়ি থেকে লোকজন বের হয়ে আগুন নেভায়। ওই একই সময়ে ওই বাড়ি থেকে ৫০ থেকে ১০০ গজ দূরে দেল বাহারের ছেলে আলম তার বাড়িতে, ১০০ থেকে ২০০ গজ দূরে রমজানের ছেলে সাজদারের বাড়ির পাশে শুকনো কাঠের খড়িতে (জ্বালানি) আগুন দেখে চিৎকার করে। এছাড়াও ওই একই সময় দেল বাহারের মেঝ ছেলে ফেরদৌসের বাড়ির পূর্ব ও পশ্চিম পাশে পৃথক দুটি স্থানে বস্তায় লাগানো জ্বলন্ত আগুন বিদ্যুতের তারের উপর ঝুলতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তারা সেই আগুন নিভিয়ে দেন। এই ঘটনার কয়েক দিন পূর্বে গত ২৮ জানুয়ারি শনিবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে পল্লী চিকিৎসক সাগরের বাড়ির বৈদ্যুতিক মিটারে জ্বলন্ত আগুন দেখা যায়। ক্ষতিগ্রস্থদের ধারনা, খড় ও শুকনো ডালপালায় আগুন জ্বালিয়ে মিটারের নিচে কে বা কারা এটি রেখে থাকতে পারেন। এছাড়াও গত ৩ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার রাতে একই মহল্লার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইউসুফ আলীর বড় ভাই ইদ্রিসের বাড়ির পূর্ব পাশে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। একই রাতে সে স্থান থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে মালঞ্চি-দয়ারামপুর রাস্তায় আতির দোকান সংলগ্ন এলাকায় ইট দিয়ে রাস্তায় বেরিগেড তৈরি করে রাস্তার মাঝখানে বস্তা ভর্তি ময়লা-আবর্জনায় লাগানো আগুন জ্বলতে দেখেন মালঞ্চি বাজারের মুদি দোকানী জাবের আলী। ওই সময় জাবের আলী ওই পথে তার বাড়ি বাটিকামারীর উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। তিনি তার মোবাইল ফোনে সেই আগুনের ভিডিও ধারন করেন। স্থানীয়রা জানান, গভীর রাতে ৫ বাড়িতে ওই জ্বলন্ত আগুন মহল্লাবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ির দূরত্ব প্রায় ১০০ থেকে ৩০০ গজ। বাড়িগুলো আলাদা আলাদা হওয়ায় এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ারও কোন মাধ্যম নেই। তবে এই ঘটনা পুর্বপরিকল্পিতভাবে কেউ বা কোন চক্র ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইউসুফ আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি কোন দুষ্টু চক্রের হতে পারে। পৌরসভার মেয়র একেএম শরিফুল ইসলাম লেলিন বলেন, ঘটনাটি তিনি জেনেছেন। এ ব্যাপারে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, এঘটনায় স্থানীয়রা একজনকে আটক করলেও নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিয়েছে। তবে পুনরায় এ ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য ওই এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার রাখা হবে।