নাটোর অফিস ॥
নতুন বছরের প্রথম দিনে নাটোরে শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠ্যপুস্তক বিতরনের মাধ্যেমে বই উৎসব উদযাপন করা হয়েছে। নতুন বছরে জেলার আড়াই হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চার লাখ শিক্ষার্থীর হাতে ৩৭ লাখ বই যাচ্ছে । এরমধ্যে ব্রেইল পদ্ধতি, ইংরেজী ভার্সন, এবতেদায়ী, দাখিল, দাখিল ভোকেশনাল, এসএসসি ভোকেশনালসহ ষষ্ট থেকে দশম শ্রেণীর বই রয়েছে। রোববার সকালে নাটোর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেনী থেকে নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন স্থানীয় সংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুল। প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের সাথে নতুন বইয়ের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে শহরের বড়হরিশপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও উপস্থিত হন সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল। নাটোর-১ আসনের (লালপুর ও বাগাতিপাড়া) সংসদ সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম বকুল গোপালপুর সুগার মিল হাইস্কুলে বই বিতরণ কার্যক্রমে অংশগ্রহন করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা সুলতানা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বই এখনও নাটোরে এসে পৌঁছেনি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আকতার হোসেন জানান, জেলার প্রথমিক পর্যায়ে ৭,৯৩,৯৫০টি বইয়ের চাহিদা থাকলেও পাওয়া গেছে ২,৫৬,৯০৫টি বই। জেলায় মোট বই প্রয়োজন ২৯ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯৭টি। আর পেয়েছেন ৮ লাখ ৮১ হাজার ৬০৯টি। বাকি বই গুলো দ্রুত সময়ের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হবে। শনিবার রাতে এসব বই আসার কথা থাকলেও রোবাবার পর্যন্ত তা আসেনি। ফলে ১ম ও দ্বিতীয় শ্রেণী বাদ রেখে রোববার সকাল থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ শুরু করা হয়। জানুয়ারী মাস পুরোটায় বই বিতরন করা হবে। নতুন বই দিয়েই শুরু হবে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠদান। সরকারী বালক ও বালিকা বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল। এছাড়া কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে এই বই বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
এসব বই বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ,পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান, কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল পরিচালনা পরষদের সহসভাপতি ও ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার সরকার অসীম কুমার, জেলা শিক্ষা অফিসার গোলাম নবীসহ সংশ্লিষ্ট প্রমুখ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বছরের প্রথম দিন নতুন বই হাতে পেয়ে খুশী হন শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পেরে খুশী হন। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কেউ কেউ স্কুলে এসে বই না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাড়ি ফিরে যান।
নাটোর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাফিউর রহমানের মা মুছলেমা খাতুন বলেন, বছরের প্রথম দিনে তার ছেলে নতুন বই পাওয়ায় তিনি খুশী হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি এজন্য ধন্যবাদ জানান। তবে সবগুলো বই সরবরাহ করা হয়নি বলে তিনি জানান।
কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক শরিফ আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেষ্টায় এবারও নতুন বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পেরে আনন্দ লাগছে। এবার কাগজের চড়া মুল্য হওয়া সত্বেও সময়মত নতুন বই স্কুলে এস পৌঁছানোর কারনে তারা বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পেরেছেন।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান যে বইগুলি নাটোরে বরাদ্দ এসেছে সেই বইগুলি দিয়েই উৎসবমুখর পরিবেশে বিতরণ করা হয়েছে। সকলেই জানেন বৈশ্বিক অবস্থার কারনে একটু সমস্যা ছিল। যে বইগুলি এখনও আসেনি সেগুলো অচিরেই আসবে। প্রধানমন্ত্রী বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। আমাদের যে শিক্ষা ব্যবস্থা সে অনুসারে জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহ থেকে ক্লাস শুরু হবে। আমাদের অভিজ্ঞ শিক্ষকরা তারা আগের বছরের যে বই রয়েছে সেগুলো দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে চালিয়ে নিবেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় বছরের প্রথম দিন সারা দেশে বই বিতরণ উৎসব শুরু হয়েছে। বৈশ্বিক কারন ও রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বইগুলো ছাপাতে সময় লাগছে। যে সব বই এখনও বরাদ্দ আসেনি সেগুলো অচিরেই চলে আসবে। সকল শিক্ষার্থী নতুন বই পাবেন।