নাটোর অফিস ॥
নাটোর জেলায় কোন প্রকার সারের সংকট নেই, পর্যাপ্ত সার মজুদ আছে, আরো অতিরিক্ত সার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সময় ও চাহিদামত সার কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে আরো সার প্রাপ্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কেউ সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিসহ কৃষকদের কাছ থেকে দাম বেশি নিলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে সার নিয়ে কেউ কোন অপপ্রচার বা বিভ্রান্ত ছড়ালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। সার ডিলারদের উদ্দেশ্যে ডিসি আরও বলেন যদি সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করেন, অবৈধ ভাবে ব্যবসা করতে চান, তাহলে কোমরে দড়ি বাঁধতেও দ্বিধাবোধ করা হবে না। ভাল ব্যবসা করলে, সব ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়াসহ ব্যবসায়ীদের পাশে থাকবে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন।
সোমবার দুপুরে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে সার ও বীজ মনিটরিং সভায় জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ এসব কথা বলেন। নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিস এই সভার আয়োজন করেন। জেলা প্রশাসক আরো বলেন, সারা বিশ্বে যখন বিভিন্ন বিষয়ে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে, তখন আমরা নির্বিঘেœ আছি। আমাদের দেশে কোন হাহাকার বা সংকট নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষির ওপর যে গুরুত্ব দিয়েছেন, আমরাও তা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চাই। অর্থনীতির প্রাণ হচ্ছে কৃষি, তাই কৃষি ও কৃষকের পাশে আমরা দাঁড়াতে চাই। কৃষি ও শিল্প বিকাশে সমন্বয় করে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে জেলা প্রশাসক সার ডিলারদের বলেন. রিসিভ ছাড়া কেউ কোন প্রকার সার বিক্রি করতে পারবেন না। জেলা প্রশাসক সঠিক তথ্য যাচাই বাছাই করে সংবাদ পরিবেশনের জন্য গনমাধ্যম কর্মীদের আহবান জানান ।
সভায় নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি ও কৃষকের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সার, বীজসহ সকল কৃষি উপকরন সহজলভ্য হওয়ায় কৃষকরা কৃষিতে উন্নয়ন করছেন। কৃষির উন্নয়নের ফলে দেশের মানুষ আজ তিন বেলা খেতে পারছে। অথচ একটি চক্র সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, দেশে সারের কোন সংকট নেই। সার নিয়ে কোন প্রকার অপপ্রচার, কিংবা সঠিক তথ্য যাচাই বাছাই না করে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোজিনা আক্তারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষন কর্মকর্তা ডঃ মোঃ ইয়াছিন আলী, নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিরিন আক্তার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম সরদার, উপজেলা কৃষি অফিসার ফৌজিয়া ফেরদৌস, কৃষি সম্প্রসারন অফিসার কিশোয়ার হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুস শুকুর, মাধনগর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার মৃধা, কৃষক প্রতিনিধি হিসাবে বক্তব্য রাখেন রঈস উদ্দিন রুবেল, বিসিআইসি সার ডিলার নাসির উদ্দিন হক, নলডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মামুনুর রশীদ প্রমুখ।
নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার ফৌজিয়া ফেরদৌস জানান, বর্তমানে তার উপজেলায় বিসিআইসি ও বিএডিসি মিলে ১৭ জন সার ডিলার আছে। তাদের অধিনে ১৬০ মেট্রিক টন ইউরিয়া, ৬২ মেট্রিক টন টিএসপি, ১৯০ মেট্রিক টন ডিএপি ও ৪৪ মেট্রিক টন এমওপি সার মজুদ আছে। কোন প্রকার সারের সংকট নেই, বরং আরো ২৫০ মেট্রিক টন সার উপ-বরাদ্দ পাওয়া গেছে।