নাটোর অফিস॥
নাটোর মসজিদ কমিটির দ্ব্েদ্ব ইমাম ও খতিবকে মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে সাবেক ও বর্তমান সভাপতির পক্ষ থেকে। এ ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আবু তালহা, আসাদুল ইসলাম, সোহেল হোসেন, উজ্জ্বল আলী ও শরিফুল ইসলাম। শনিবার রাতে সদর উপজেলার সিংহারদহ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গত শুক্রবার সদর উপজেলার সিংহারদহ মসজিদের ইমাম আব্দুল জব্বারকে মসজিদ কমিটির সভাপতি করা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষ জয়নাল হাজীর সমর্থকদের হামলায় মসজিদের খতিব হুজাইফা ও ইমাম আব্দুল জব্বার সহ অন্তত ৮ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে খতিব হুজাইফা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাছিম আহম্মেদ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এসআই সাজ্জাদ হোসেন গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এসআই সাজ্জাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ইমাম-খতিবের পক্ষে মামলা দায়ের করেন মসজিদের বর্তমান সভাপতি ও ইমাম আব্দুল জব্বার। অপরদিকে প্রতিপক্ষ জয়নাল হাজীর পক্ষে মামলা করেন জনৈকা সাবিহা জামান। ওই উভয় মামলায় শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে খতিব হুজাইফার বাবা নিয়াজ খাঁন জানান, হুজাইফা এখনো রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) চিকিৎসাধীন। শনিবার তার সিটিস্ক্যান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত শুক্রবার নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের হাট সিংহারদহ এলাকায় মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়৷ আহতদের মধ্যে মসজিদের খতিব হুজাইফাকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, হাট সিংহারদহ পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের সদ্য সাবেক সভাপতি জয়নাল হাজীর বিরুদ্ধে মসজিদ তহবিলের অর্থ আতœসাতের অভিযোগ করে আসছিলেন এলাকাবাসী। এ ঘটনার কোন প্রতিকার না পাওয়ায় সম্প্রতি এলাকাবাসী জয়নাল হাজীর নেতৃত্বের কমিটিকে বাতিল ঘোষণা করে মসজিদের ইমাম আব্দুল জব্বারকে সভাপতি হিসেবে ঘোষণা দেন। এতে জয়নাল হাজী ও তার অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হন। শুক্রবার ফজর নামাজ শেষে তারা মসজিদের সামনে অবস্থান নেন। এসময় তারা মসজিদের ভেতর ইমাম ও নতুন সভাপতি আব্দুল জব্বারকে অবরুদ্ধ করে নতুন কমিটি বাতিলের দাবীতে শ্লোগান দেন। আব্দুল জব্বারকে অবরুদ্ধ করার খবরে এলাকাবাসী ছুটে এলে দুই পক্ষ মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে জয়নাল হাজীর অনুসারী হোসেন, শাহ জামাল, কদম আলী, আরিফ ও মাজেদুল এবং আব্দুল জব্বারের অনুসারী খতিব হুজাইফা, আতাহার ও সেলিম আহত হন। এদের মধ্যে হুজাইফার অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রথমে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। ওই মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে শনিবার রাত থেকে অভিযান শুরু করেছে। এপর্যন্ত ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।