নাটোর অফিস॥
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জেরে নাটোরের নলডাঙ্গায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের পিটুনিতে জীবন-মৃত্যুর-সন্ধিক্ষণে নাটোরের নলডাঙ্গার জামিউল আলীম জীবন (২০)। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইভ সার্পটে রয়েছেন।
জীবনের চাচা উপজেলা অওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক এবং বর্তমানের কলেজ শিক্ষক এসএম ফিরোজ বলেন, আইসিইউতে লাইভ সার্পটে থাকা আমার ভাতিজা জামিউল আলীম জীবনকে বুধবার সকালে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার পর চিকিৎসকরা মৌখিকভাবে জানান জীবন মারা গেছে। কিন্তু হঠাৎ করেই তাকে আবারও আইসিইউতে নেয়া হয় এবং লাইভ সার্পট দেয়া হয়। পরে আমরা আইসিইউ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা বলছে, জীবন এখনো জীবিত। তাকে লাইভ সার্পটে রাখা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘন্টা লাইভ সার্পটে থাকবে। এই সময় তাকে পরখ করা হবে।
স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, মসজিদের মাইক চুরির বিচারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লাইভ করেন জামিল। এর জের ধরে সোমবার রাতে নলডাঙ্গা উপজেলার রামশাকাজিপুর আমতলী বাজারে জীবনকে পিটিয়ে জখম করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ। এ সময় তাকে বাচাঁতে গিয়ে আহত হন তার পিতা ফরহাদ হোসেন। পরে আহত পিতা-পুত্রকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী জাহানারা বেগম বাদি হয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, তার বড় ভাই ফয়সাল শাহ ফটিক ও অপর ভাই আলিম আল রাজি শাহের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫ জনের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। ওই মামলা দায়েরের পর পুলিশ মামলার আসামি আসাদের ভাই আলিম আল রাজিকে গ্রেফতার করে।
এদিকে মঙ্গলবার দিনভর জামিলের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী সহ উপজেলা আওয়ামীলীগ ,ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা চেয়ারম্যান আসাদকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে মঙ্গলবার রাতে নলডাঙ্গা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। মিছিলটি স্থানীয় পেট্রোল পাম্প থেকে বের করে নলডাঙ্গা বাজার প্রদক্ষিন করে। পরে সিএনজির মোড়ে সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ¦ আইয়ুব আলী মন্ডল, উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ সভাপতি আমিনুল ইসলাম হাদু, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাবেক সাধারন সম্পাদক তৌহিদুর রহমান লিটন, যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেনসহ অন্যান্য যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
এসময় এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ দলের নেতাকর্মিগণ উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে বক্তারা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নানা অপকর্ম তুলে ধরেন এবং তাকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী জানান। একই সঙ্গে নলডাঙ্গা উপজেলায় তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন বিক্ষুব্ধ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
নলডাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, জীবনের মৃত্যুর খবরের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এঘটনায় কোন ধরনের বিশৃংখলা ঠেকাতে পুলিশ সর্তক রয়েছে। এছাড়া জীবন ও তার বাবা ফরহাদ হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের কৃত মামলার আসামি আলিম আল রাজিকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।