নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ভবানীপুর গ্রাম থেকে গোপন বৈঠক চলাকালে আঞ্চলিক কমান্ডারসহ জেএমবির ৫ সদস্য গ্রেফতার করেছে র্যাব-৫ এর একটি দল। র্যাব জানিয়েছে, জেএমবির ওই আঞ্চলিক কমান্ডারের নাম জোবায়ের হোসেন (৩৫)। সে বড়াইগ্রামের দোগাছী এলাকার মৃত আজিমুদ্দিনের ছেলে। গ্রেফতারকৃত অপর ৪ সক্রিয় সদস্যরা হলেন মোস্তাফিজুর রহমান ফরহাদ (৩৬), মোঃ আলাউদ্দিন আব্বাস (৩৮), আশরাফুল ইসলাম (৩২) এবং জাকারিয়া। তাদের সকলেরই বাড়ি বড়াইগ্রামে। র্যাব জানায়, জোবায়ের বড়াইগ্রাম থানাধীন দোগাছী ইউনিটের গায়েরে এহসার। সে শারীরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে এবং বিভিন্ন অস্ত্র সম্পর্কে তার প্রাথমিক ধারণা আছে। এছাড়া সে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও জিহাদী দাওয়াত প্রচারে নিয়োজিত ছিল।
অভিযানে উগ্রবাদী বই, লিফলেট, মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, মেমোরী কার্ড, জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি), টর্চ লাইট, মোমবাতি, গ্যাস লাইট ০১, পত্রিকা, পলিথিন সীট, এবং নগদ ৯২৪ টাকা উদ্ধার করা হয়।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় র্যাব- ৫, সিপিসি-২ এর কমান্ডার আজমল হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানান, চলতি বছরের ১৯ জুলাই ২০১৮ তারিখ নাটোর জেলার সদর থানাধীন রুইয়েরভাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতারকৃত ৩ জন জেএমবি সদস্যের তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নাটোর জেলায় জেএমবি সদস্যরা বিভিন্ন আঞ্চলিক ইউনিটে বিভক্ত হয়ে সদস্য সংগ্রহ, ফান্ড তৈরী ও সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৫, সিপিসি-২, নাটোর ক্যাম্প অনুসন্ধান ও গোয়েন্দা নজরদারী আরও জোরদার করে। এরূপ নজরদারীর এক পর্যায়ে জানা যায়, এই সংগঠনের কিছু সক্রিয় সদস্য জেলার কোন এক গোপন স্থানে জমায়েত হবে। এরূপ তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়িয়ে মিটিং এর স্থান চিহ্নিত করে র্যাব। এরই ধারবাহিকতায় রোববার দিনগত রাত আনুমানিক ০১:২০ ঘটিকার সময় সিপিসি-২, নাটোর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম ধানাধীন ভবানীপুর এলাকায় গোপন মিটিং চলাকালীন সময়ে আভিযান চালিয়ে আঞ্চলিক কমান্ডারসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে।
আজমল হোসেন আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদেরকে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর সক্রিয় সদস্য এবং সংগঠনের বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া আরও স্বীকার করে পূর্বে র্যাব কর্তৃক গ্রেফতারকৃত জাহিদুল, আমজাদ, জহিরের সাথে একতাবদ্ধভাবে নাটোর অঞ্চলে জেএমবিকে শক্তিশালী করার জন্য দলীয় মিটিং উগ্রবাদী বই বিতরণ, শারীরিক প্রশিক্ষণ, অস্ত্র সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, ইয়ানতের টাকা আদায়, জিহাদী দাওয়াত ইত্যাদি কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে এবং দেশে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আলোচনা করে।