নাটোর পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে আদালতের আদেশ অবমাননার অভিযোগ একাংশের

নাটোর অফিস ॥
নাটোরে পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন বন্ধে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে নির্বাচন কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় আদালত অবমাননার অভিযোগ করেছেন পরিবহণ শ্রমিকদের একাংশ। শনিবার দুপুরে শহরের সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্থানীয় একটি পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন , আদালতের নির্দেশ জারির পর সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে একটি বাড়িতে ভোটার কার্ড এবং পরিচয়পত্র তৈরি করার ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় শংকিত হয়ে পড়েছেন পরিবহণ ¤্রমিকদের ওই অংশ। লিখিত বক্তব্যে পরিবহরণ ¤্রমিক নেতা মিঠুন আলী বলেন, ৩০ জুলাই তফসিল ঘোষনার পর তিনি সভাপতি ও মানিক আলী সাধারন সম্পাদক পদে মনোনয়ন পত্র উত্তোলন করতে গেলে মনোনয়ন পত্র না দিয়ে তাদের লাঞ্চিত করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি নির্বাচন বন্ধের আবেদন জানিয়ে আদালতে আর্জি জানান। শুনানী শেষে আদালত নির্বাচন কমিশনার সহ সংশ্লিষ্টদের স্বশরীরে হাজির হয়ে জবাব দাখিলের আদেশ দেন। এছাড়া পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ রাখতে মৌখিক নির্দেশনা দেন। কিন্তু ওই আদেশকে উপক্ষো করে নির্বাচন কমিশন প্রতীক বরাদ্দ,খসরা ভোটার তালিকা প্রকাশ করা সহ প্রতীক বরাদ্দ করে নির্বাচনী কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। আদালত অবমাননা করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সুপ্রিয় ভৌমিক সহ ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ কমীরা পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে না বসে একটি বাড়িতে বসে ভোটার কার্ড এবং পরিচয়পত্র তৈরি করছিল। তারা নিজেরাই শ্রমিক ইউনিয় নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষর করে কার্ডগুলি তৈরি করছিল। তাদের সেই অনৈতিক কার্যক্রমের ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে সাধারন সম্পাদক প্রার্থী রিপন ও পলাশকেও দেখা যায়। ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিজেদের পক্ষে নেয়ার জন্য অন্যায়ভাবে তারা এই কাজ করছিল।
মনোনয়ন উত্তেলনের সময় আমাকে যে ভোটার তালিকা দেওয়া হয়েছে সেখানে মোট ভোটার ছিল ৩,৭৯৩ জন। কিন্তু পরবর্তীতে আদালতে নির্বাচন কমিশন বলেছে ভোটার সংখ্যা ৬হাজার জন। তাদের এই কার্যক্রম বন্ধে আমি আবারও আদালতের কাছে আজি জানালে আদালত নির্বাচনের কার্যক্রম বন্ধে সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সুপ্রিয় ভৌমিক বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি তফসিল ঘোষনার অনেক আগের। পরিবহন শ্রমিক নেতাদের অনুরোধে তারা ভোটার কার্ড সহ পরিচয় পত্র লিখে দেন। ওইসব কার্ডে সভাপতির স্বাক্ষর করে এনে তালিকা দিয়েছিলেন। সেই তালিকা অনুযায়ী পরিচয়পত্রে লিখেছেন মাত্র। তারা শ্রমিকদের কাজে সাহায্য করেছেন।
নির্বাচন কমিশনার সৈয়দ মোর্ত্তুজা আলী বাবলু বলেন, তিনি নির্বাচন বন্ধে ২১ আগষ্ট আদালতের নির্দেশনা পেয়েছেন। ওই নির্দেশনা পাওয়ার পর নির্বাচনী সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। সংবাদ সমে¥লনে যা অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। কেননা ৩০ জুলাই তফসিল ঘোষনার পর নির্বাচনী কার্য়ক্রম অনুযায়ী মনোনয়ন পত্র বিতরণ, খসরা ভোটার তালিকা টানানো,আপত্তি ও চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে ১৯ আগষ্ট প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে ৪৪৪৪ জনের ভোটার তালিকা চুড়ান্ত করা হয়। ২১ আগষ্ট আদালতের আদেশ হাতে পাওয়ার পর নির্বাচন স্থগিত করা হয়। আদালত পরবর্তী নির্দেশ যা দিবেন সেটিই করা হবে। এদিকে যারা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ এনেছেন তা সঠিক বলেননি। অপরদিকে যারা ঘরে বসে কার্ড তৈরি বা ভোটার আইডি বানিয়েছেন তারা কিভাবে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা অর্ন্তভুক্ত করবেন আমার জানার বাহিরে। যে যার মত করে বলছেন বা করছেন তাদের কেউ নির্বাচন কমিশনের সাথে এনিয়ে কথা বলেননি।
নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাছিম আহমেদ আদালতের আদেশ তালিম করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের আদেশের বিষয়টি জানার পর নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশিন। ৩ সেপ্টেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ঘটনার বিষয়টি তিনি জানেননা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *