নাটোর অফিস ॥
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট একই সূত্রে গাঁথা। একাত্তরের পরাজিত শক্তিরাই ঐসময়ের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। ৭১ এর পরাজিত অপশক্তি বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হত্যা করতে চেয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত জোট ঠিক একই ভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও আইভি রহমানসহ দলের ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন আর আহত হয়েছিলেন ৪০০ জন নেতা-কর্মী। তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে। একটি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম ও উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। আবারও দেশী-বিদেশী সেই অপশক্তি মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। তারা দেশ বিরোধী চক্রান্ত ও নানা অপপ্রচার করছে।
নাটোরের সিংড়ায় ২১ আগষ্ট বোমা হামলার প্রতিবাদ সমাবেশ এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার শীর্ষক মতবিনিময় সভা ও বিদ্যালয়সমূহে ওয়াইফাইয়ের রাউটার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় পলক এসব কথা বলেন।
রোববার বিকেলে সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শেখ ওহিদুর রহমান এর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান। সিংড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক, পৌর মেয়র জন্নাতুল ফেরদৌস,সৈয়দ মোর্ত্তুজা আলী বাবলু,সাবেক মন্ত্রী আহাদ আলী সরকার প্রমুখ।
পলক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের শুধু স্বাধীনতাই উপহার দেননি, মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে তিনি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে ‘সোনার বাংলা’য় পরিণত করতে উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করেন। শুধু উন্নয়নই নয়, সারা বিশ্বের শোষিত মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্ব রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর আবির্ভাব ঘটেছিল। কুচক্রী মহল বঙ্গবন্ধুর এই উত্থানকে মেনে নিতে পারেনি, তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ১৯৭৫ সালে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং ২০০৪ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ তথা দেশকে নেতৃত্ব শূণ্য করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক আজ জেগে আছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করেছি, নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেছে। তাই কোন ষড়যন্ত্র আর সফল হবেনা। বাংলাদেশ আর কখনো ২০০১ থেকে ২০০৬ এর মত বিভিষিকাময় মৃত্যু উপত্যকতায় ফিরে যাবেনা।
এছাড়া দুপুরে সিংড়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সামিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী অরও বলেন, দেশে সারের কোন ঘাটতি নেই। অথচ একটি চক্র দেশের মানুষকে বিভ্রান্তি করছে এবং সার মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। যাতে সরকারের ভাবমুর্তি বিনষ্ট হয়। কিন্তু তাদের সেই সড়যন্ত্র বাংলার মাটিতে বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না। কোন সার ডিলার সার মজুদ করে যদি দাম বেশি নেয়, সার নেই বলে গুদামজাত করে আর তাতে যদি কোন কৃষকের ভোগান্তি হয়। তাহলে সেই ডিলারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ন্যায্য দামে সার বিক্রি করতে হবে এবং সাথে সাথে কৃষকদের সার প্রাপ্তিও নিশ্চিত করতে হবে। কোন ভাবেই সার মজুদ করা যাবে না। বিষয়টি তিনি নিজে এবং প্রশাসন মনিটরিং করবেন বলে বলেন ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান কামরুল হাসান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা হক রোজি, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলী আশরাফ, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবুরুশত মতিন প্রমূখ।