নাটোর: নাটোরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ ও বাইসাইকেল বিতরণে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সংস্থার এক নেতার বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে সমুদয় টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বানু।
জানা যায়, নাটোর সদর উপজেলা মিলনায়তনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের ১৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ব্যাগ ও সাইকেল বিতরণের আয়োজন করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, ওই সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নরেশ ওড়াও প্রতিটি ব্যাগের বিনিময়ে ১০০ শিক্ষার্থীর থেকে মাথাপিছু ১০০ টাকা টাকা ও সাইকেলের বিনিময়ে ৫০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা আদায় করেছেন।
সোমবার শিক্ষা উপকরণ নিতে উপজেলায় এসে এক শিক্ষার্থী দেখেন, এ সংক্রান্ত তালিকায় তার নাম নেই। বিষয়টি জানতে সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দারস্থ হলে তারা কোন উত্তর দেননি। এসময় ওই শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, বাইসাইকেলের তালিকাভুক্তি জন্য নরেশ ওঁড়াওয়ের লোকজন তার কাছে ৬০০ টাকা দাবী করেন। কিন্ত ওই শিক্ষার্থী সাইকেলটি পাবার পর টাকা নেয়ার অনুরোধ করে। তারা সোমবার উপজেলায় আসতে বললে ওই শিক্ষার্থী এসে দেখে, তার নাম তালিকায় নেই। এসময় অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রধান অতিথি সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুলের কাছে অভিযোগ করে। সাংসদ তৎক্ষণাত উপস্থিত শিক্ষার্থীদের নিকট জানতে চাইলে সকলেই জানায় ব্যাগ ও সাইকেল পেতে তারা আদিবাসী নেতা নরেশ ওঁড়াওয়ের নিকট টাকা দিয়েছেন। এতে সাংসদ ক্ষুদ্ধ হয়ে সমুদয় টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দিতে নির্দেশ দেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, সরকারী উপকরণ সহায়তা টাকার বিনিময়ে বিতরণের চেষ্টা করলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নরেশ ওরাও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কোন অর্থ আদায়ের সাথে আমি জড়িত নই। আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতে মিথ্যা অভিযোগ তুলে এই অপপ্রচার করা হচ্ছে।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বানু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আসা এসব উপকরণ বিনামুল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী এরসাথে যুক্ত নয়। আদিবাসী সম্প্রদায়ের একজন নেতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন নৃ-গোষ্ঠির শিক্ষার্থীরা। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে থেকে অভিযোগের সমুদয় অর্থ আদায় করে তা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে তিনিও নির্দেশ দিয়েছেন।