নাটোর: নাটোরে ওয়াকফ্ সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে জনসাধারণের চলাচলে বাধাদানের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জায়গাটি পরিদর্শন করে চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী স্থাপনা অপসারণে সাত দিনের সময় দিয়েছে প্রশাসন।
জানা যায়, আলহাজ্ব মকছেদ আলী, মোহাম্মদ মতিন ও মাসুদ নামে শেখেরহাট, বাসুপাড়া, কাঠালবাড়িয়ার তিন বাসিন্দা সরকারী রাস্তা দখল করে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের দরাপপুর এলাকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জয়নাল আবেদীন প্রভাব খাটিয়ে কাদিরাবাদ ক্যান্টন্মেন্ট-পিটিআই সড়কের শেখেরহাট হয়ে বাড়াতিপাড়ার মাধববাড়িয়া গ্রাম পর্যন্ত নকশাভুক্ত রাস্তার উপর ৪০ফুট দৈর্ঘ্যের ছাদসহ পাঁকা ভবন নির্মাণ করেছেন। নির্মিত ভবনটি শাহ সুফী চিশতিয়া বদরুদ্দিন আওয়ালিয়া মাজারের নামে ওয়াকফ্ করা সম্পত্তির উপর অবস্থিত। এতে চলাচলের রাস্তা সংকুচিত হয়ে পাশ্ববর্তী শেখেরহাট, বাসুপাড়া, কাঠালবাড়িয়া ও দরাপপুরের মধ্যে যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় একটি ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্রে যানবাহন চলাচল হুমকির মুখে পড়েছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহষ্পতিবার দুপুরে জায়গাটি পরিদর্শনে আসেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীম ভুঁইয়া। তিনি মাজার কর্তৃপক্ষ, অভিযোগকারী, বিবাদী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন।
ওয়াকফ্ সম্পত্তি দাতা মরহুম ফজু খন্দকারের নাতি সোহানুর রহমান সুরুজ অভিযোগ করেন, ‘ এলাকাবাসীর কল্যানে তার পিতামহ বিভিন্ন সম্পত্তি ওয়াকফ্ করে যান। প্রভাব খাটিয়ে সেগুলো দখলের পাঁয়তারা করছেন জয়নাল আবেদীন। দ্রুত ভবন উচ্ছেদের মাধ্যমে জায়গা দখলমুক্ত হোক।’
মাজার কমিটির সাধারন সম্পাদক রেজাউন নবী বলেন, ‘ওয়াকফ্ সম্পত্তি যে অবস্থায় আছে, সেভাবেই থাকার নিয়ম। পুরো সম্পত্তির উপর স্থাপিত ছোট দোকানগুলো থেকে প্রাপ্ত আয় মাজারের রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করা হয় মাজার কমিটির সিদ্ধান্তে। জয়নাল আবেদীন স্থাপনা তৈরীর কোন অনুমোদনই নেননি, রীতিমতো সরকারী জমি দখল করেছেন তিনি।’
ওয়াকফ্ সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণের ব্যপারে অভিযুক্ত জয়নাল আবেদীনের বক্তব্য চাওয়া হলে তিনি বলেন,’ মাজার পরিচালনার কমিটি নেই।’ এর বেশী তিনি কিছু বলেননি।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীম ভুঁইয়া বলেন, ‘মাজার পরিচালনা কমিটি তাদের জায়গার উপর নির্মিত স্থাপনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবে। যেহেতু মাজার কমিটি কোন অনুমতি দেয়নি এবং রাস্তা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে, তাই ভবনটি অপসারণের পদক্ষেপ নিতে মাজার কমিটিকে সাত দিনের সময় দেয়া হয়েছে। এর ব্যতিক্রম হলে প্রশাসন রাস্তাটি দখলমুক্ত করবে।’