নাটোর অফিস ॥
সড়ক সম্প্রসারণ কাজের জন্য ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নাটোর প্রেসক্লাব ভবন। আজ সোমবার থেকে সড়ক বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত নাটোর প্রেসক্লাব ভবনসহ শহরের শত বছরের পুরাতন অবৈধ স্থাপনাও গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার সকাল ১১টার দিকে সড়ক বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপ সচিব কামরুজ্জামান মিয়ার নেতৃত্বে উচ্ছেদ কার্যক্রমের শুরুর পর দুপুরে প্রেসক্লাব ভবন ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
নাটোর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম জানান,শহরের অভ্যন্তরে প্রধান সড়কে চলমান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কাজের জন্য উভয় পাশের অধিগ্রহণকৃত এবং অবৈধ দখলে থাকা শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আগামি তিনদিন এ অভিযান চলবে বলে জানান তিনি। ৮৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নাটোর শহরের হরিশপুর বাইপাস থেকে বেলঘড়িয়া বাইপাস পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণ করে দুই লেনে বিভক্ত করার কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। এরমধ্যে শহরের জিরো পয়েন্টের উভয় পাশে প্রায় ৭০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে সড়ক ১০০ ফুট প্রশস্ত করা হবে। এজন্যে জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে অর্থ পরিশোধের জন্যে সাড়ে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। মামলা সহ নানা জটিলতায় মাঝপথে আটকে ছিল কাজটি।
এদিকে নাটোর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী লাহিড়ী জানান, প্রেসক্লাবের ভবনের জায়গাটি আরএস রেকর্ড অনুযায়ী পৌরসভার সম্পত্তি। ২০০৭ সালে নাটোর পৌরসভার সাথে নাটোর প্রেসক্লাবের বাৎসরিক ভাড়ার চুক্তিনামায় নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি নির্মাণ করে নাটোর প্রেসক্লাব। ২০১৯ সালে জায়গাটি নিজেদের দাবী করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ পৌরসভাকে বিবাদী করে দায়েরকৃত মামলাটি এখনো চলমান। এই অবস্থায় ১৪ মে বিকেলে ছুটির দিনে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উচ্ছেদ নোটিশ প্রদান করে প্রসক্লাব ভবন ভাঙা হয়েছে। আমাদের মূল্যবান আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি সড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। এসব সামগ্রী ছাড়াও আধুনিক ভবন ভেঙে আমাদের অন্তত ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করা হয়েছে।
নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন বলেন, নাটোর প্রেসক্লাব কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ন। সরকারের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান। নাটোর প্রেসক্লাবের সকল সম্মানিত সদস্য সরকারের উন্নয়ন কাজের পক্ষে রয়েছেন। তবে সড়কের যে অংশে রাস্তা ১০০ ফুট প্রশস্ত হবে, সেই অংশে নাটোর প্রেসক্লাবের অবস্থান নয়। ছুটির দিনে হঠাৎ নোটিশ না দিয়ে কিছুদিন সময় দিয়ে প্রেসক্লাব ভবন উচ্ছেদ করা হলে তা শোভন হতো এবং আমরা ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেতো।