নাটোর অফিস ॥
ইউএনওর গাড়ি চাপায় সাংবাদিক সোহেল আহমেদ জীবনের নিহত হওয়ার ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রহিমা খাতুনকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। অপর দুই সদস্য হলেন সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এমএম সামিরুল ইসলাম ও নাটোরের বিআরটিএর সহকারী পরিচালক রাশেদুজ্জামান।গতকাল গঠন করা এই তদন্ত কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, গাড়ির চালক কে ছিলেন এবং সরকারি গাড়ি নিয়ে কেন সেখানে যাওয়া হয়েছিল। চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচ্ছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন বিশ্লেষন করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বরে তিনি জানান।
এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষের অকাল মৃত্যুতে নির্বাক হয়ে পড়েছেন সাংবাদিক সোহেল আহমেদ জীবনের স্ত্রী জনি আক্তার। নাবালক দু’টি সন্তান সহ পরিবারের ৫ জনের ভরন পোষন ও সন্তানদের আগামী ভবিষৎ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি। স্বামীর অকাল মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেননা জনি আক্তার। এখন শুধুই বিলাপ করছেন তিনি। তার স্বামীই ছিলেন তার একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার শশুর অনেক আগেই মারা গেছেন। নাবালক দুই সন্তান সিয়াম ও সামিয়ার ভবিষ্যৎ কি হবে এখন। তার স্বামী সোহেল আহমেদ জীবন উপজেলার সেরকোল আগপাড়া বন্দর হাই স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক দুরন্ত সংবাদে সিংড়া প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। তার আয়েই চলতো তাদের সংসার।
অপরদিকে সোমবার সন্ধ্যার পর সাংবাদিক সোহলে রানা জীবনের লাশ তার বালুয়া বাসুয়ার বাড়িতে নেওয়া হয়। এসময় পরিবারের সদস্য সহ এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। যারা শেষ বারের মত সাংবাদিক সোহেলকে দেখতে তার বাড়িতে জড়ো হয়েছিলেন তারও কান্না ধরে রাখতে পারেননি। এসময় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। পরে বাদ এশা জানাজার নামাজ শেষে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে নলডাঙ্গা ইউএনওর গাড়ির নিচে চাপা পড়ে সাংবাদিক সোহেল আহমেদ জীবন নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় এখনও কোন মামলা হয়নি। নিহতের পরিবার সহ স্থানীয় সাংবাদিক মহল এঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সহ দোষী ব্যাক্তির শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর-ই আলমের সাথে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে এবিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান,তিনি এখনও পর্যন্ত এসংক্রান্ত কোন এজাহার পাননি।
উল্লেখ্য,সোমবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সিংড়া উপজেলার নিংগুইন এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পোর সামনে নলডাঙ্গা ইউএনর সরকারী গাড়ির নিচে চাপা পড়ে স্থানীয় সাংবাদিক সোলে আহমেদ জীবন নিহত হয়। সাংবাদিক সোহেল আহমেদ মোটর স্ইাকেলে করে তার কর্মস্থল সিংড়া উপজেলার সেরকোল আগপাড়া বন্দর হাই স্কুল এন্ড কলেজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। তার মোটর সাইকেলটিও গাড়ির নিচে পড়ে দুমরে মুচরে গেছে।