নাটোর অফিস॥
বাপের বাড়ি বিশ্রামে এসেও গর্ভের সন্তানকে বাঁচাতে পারেনি গৃহবধূ সোনিয়া বেগম (২৮)। সোনিয়ার ছোট ভাই মো. সজীব ও তার স্ত্রী খাদিজা বেগমের দ্বন্দ্বের কারণে ২০ মার্চ রাতে খাদিজার বাপের বাড়ির লোকজনের হামলার শিকার হয় সোনিয়া। এতে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। সোনিয়া নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মকিমপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক আব্দুস সালামের মেয়ে। সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় স্বামী ফারুক তাকে মেনে নিচ্ছে না।
জানা যায়, সজীবের স্ত্রী খাদিজা শশুড় শাশুড়ি থাকে পৃথক থাকতে চায়। কিন্তু সজীব মানবিক কারণে তার বৃদ্ধ বাবা-মাকে পৃথক রাখতে চায় না। এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে খাদিজা তার বাবা খাজা মিয়াকে খবর দেয়। খাদিজার বাবা, ভাই ও মামারা ওইদিন ২০ মার্চ রবিবার রাত ৮টার দিকে সজীবের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় সজীবের বাপ-মা ও বোন সোনিয়াকে মারপিট করে তারা। গুরুতর জখম অবস্থায় সোনিয়াকে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক শরিফুল ইসলাম বলেন, তলপেটে আঘাতের কারণে সোনিয়ার তিন মাসে ভ্রুণ নষ্ট হয়ে গেছে। সুস্থ হতে তার দীর্ঘ চিকিৎসা ও বিশ্রাম দরকার। সজীব জানায়, তার মামাশ্বশুর জাকের আলী মাস্টার, জিয়াউর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলমরা মকিমপুর এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা ভয়ে তাদের সহযোগিতা করতে আসেনি।
গত ২৭ মার্চ সজীবের বাড়িতে গেলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। অসুস্থ সোনিয়া বিছানায় কাতরাচ্ছেন। তার বাবা-মা জানায়, বাটাম দিয়ে পেটানো হয়েছে সোনিয়াকে। তার শরীরে এখনও আঘাতের অনেক ক্ষত রয়েছে।
জাকির মাস্টারের বাড়িতে গেলে তিনি বলেন, ধস্তধস্তির সময় হয়তো সোনিয়ার আঘাত লাগতে পারে। তবে তার সন্তান নষ্ট হওয়ার মতো কিছু করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে তারা মীমাংসা করবেন বলে জানান।
ইউএনও অফিসের নারী সহায়তা কেন্দ্রে সোনিয়া অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে নারী উদ্যোক্তা বেলী খাতুন নিশ্চিত করেছেন। সোনিয়া যেন ন্যায় বিচার পায়- এ দাবী এলাকাবাসীর।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. আব্দুল মতিন বলেন, এব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।