নাটোর অফিস ॥
নাটোরে পঞ্চম বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক মিলন মেলায় মনোমুগ্ধকর পরিবেশনের মাধ্যমে আলো ছড়িয়েছে দুই দেশের শিল্পিরা। বাংলাদেশ ও ভারতীয় শিল্পিদের সংগীত পরিবেশনা দর্শক ¯্রােতাদের করেছে মুগ্ধ । এই সাংস্কৃতিক মিলনমেলার আয়োজন বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে প্রত্যাশা দু’দেশের মানুষদের।
রোববার নাটোরের ইতিহাসখ্যাত উত্তরা গণভবন চত্বরে ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পঞ্চম বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক মিলনমেলার আয়োজন করা হয়। এই সাংস্কৃতিক মিলন মেলায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী (কারাগার) রাম প্রসাদ পালসহ ভারতের একটি প্রতিনিধি দলের সদস্যদের আগমনে মিলনমেলার আকর্ষণ বাড়িয়ে তোলে। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা ভারতীয় অতিথিরা ইতিহাসখ্যাত উত্তরা গণভবনের শৈল্পিক স্থাপনাসহ আতিথিয়তায় মুগ্ধ হন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এবং পঞ্চম বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক মিলনমেলার যুগ্ম আহ্বায়ক জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ভারতের সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি’র চ্যান্সেলর এবং ফ্রেন্ডস্ অব বাংলাদেশ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট সত্যম রায় চৌধুরী মঞ্চে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
জেলা প্রশাসন ও ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের আয়োজনে এই সাংস্কৃতিক মিলন মেলায় ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী (কারাগার) রাম প্রসাদ পাল, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ভারতের সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি’র চ্যান্সেলর এবং ফ্রেন্ডস্ অব বাংলাদেশ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট সত্যম রায় চৌধুরীর ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ কোঅর্ডিনেটিং চ্যাপ্টারের প্রধান সমন্বয়ক এ এস এম সামছুল আরেফিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি, নাটোর সদর ও নলডাঙ্গা আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রতœা আহমেদ, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ প্রমুখের ধারণকৃত বক্তব্য অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।
রোববার সন্ধ্যায় পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। লেজার লাইট শো’র মাধ্যমে ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভ্যুদয় পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়ার পথ পরিক্রমা উপস্থাপন করা হয়। এরপর ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পিদের অংশগ্রহনে যৌথ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা শুরু হয়। এর আগে অতিথিবৃন্দ উত্তরা গণভবনে বঙ্গবন্ধুর ওপর পাভেল রহমানের একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী উপভোগ করেন। প্রদর্শনীতে নাটোরের উত্তরা গণভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য সহযোগে আটটিসহ মোট ২০টি দূর্লভ আলোকচিত্র স্থান পায়। এদিন অতিথিবৃন্দ গণভবনে মৈত্রী বৃক্ষ রোপন করেন। ভারতীয় অতিথিরা নাটোরের মানুষদের আথিতীয়তায় মুগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি প্রশংসা করেছেন এখানকার ইতিহাস ,ঐতিহ্যে ও সংস্কৃতিক চর্চার জন্য। সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দুই দেশের বিশিষ্টজনরা।
ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী শ্রী রাম প্রসাদ পাল তার অভিব্যক্তি ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ ভারতের অকৃত্রিম বন্ধু। এই মিলন মেলার মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে।
সফর সঙ্গি হয়ে আসা ভারতীয় জনপ্রিয় অভিনেতা সাহেব ভট্টাাচার্জ বলেন, নাটোরের মানুষ অতিথি পরায়ন।ততাদের আতিথিয়তায় তিনি মুগ্ধ। এখানে এসে অভুতপুর্ব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এছাড়া মনে হয়েছে ইতিহাস হাতের মুঠোয়।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, নাটোরের উত্তরা গণভবনে ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের ৫০ বছর পুর্তি উপলক্ষে পঞ্চম বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক মিলনমেলার আয়োজন করায় পঞ্চাশ বছর আগে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া উত্তরা গণভবন নাম করনের সার্থকতা অর্জিত হয়েছে।
সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে রাজশাহী অঞ্চল থেকে ভাব বিনিময় শুরু হলো বলে মনে করছেন রাজশাহীর সিটি মেয়র। তিনি বলেন ভারত থেকে আগত অতিথিদের সাথে আলোচনা হয়েছে আগামীতে রাজশাহী থেকে কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু সহ পদ্মা নদীতে নৌ রুট ব্যবহার করে ব্যবসা বানিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে।
রাজশাহীর সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে রাজশাহী অঞ্চল থেকে ভাব বিনিময় শুরু হলো। ভারত থেকে আগত অতিথিদের সাথে আলোচনা হয়েছে আগামীতে রাজশাহী থেকে কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু সহ পদ্মা নদীতে নৌ রুট ব্যবহার করে ব্যবসা বানিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ বলেন,বাংলাদেশ-ভারত পঞ্চম সাংস্কৃতিক মিলন মেলার আয়োজনে উত্তরা গণভবন ঘোষনার যে ৫০ বছর পুর্তি তাতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এই আয়োজনে বন্ধু রাষ্ট্রের অতিথিরাও বেশ খুশী এবং সম্মানিত বোধ করেছেন। সকলের সহযোগীয় অনুষ্ঠান সুন্দর সার্থকভাবে সম্পন্ন হওয়ায় তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান।