নাটোর অফিস ॥
নাটোরের গুরুদাসপুরে ধারালো ব্লেড দিয়ে সুখি ও সুমি নামে দুই বোনের এক বোনের চুল কেটে দিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের সাবেক স্বামীদের বিরুদ্ধে। মামলা তুলে নেওয়া সহ ডিভোর্স পেপারে স্বাক্ষর না দেওয়ায় এই নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ নির্যাতিত দুই বোনের। শুক্রবার রাতে উপজেলা পৌর সদরের খামারনাচকৈড় এই ঘটনা ঘটে। আহত দুই বোনকে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। সুখি ও সুমি গুরুদাসপুর পৌর সদরের খামার নাচকৈড় এলাকার হযরত আলী মোল্লার মেয়ে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, সুখির ছোট বোন সুমির বিয়ে হয় চাঁচকৈড় পুড়ানপাড়া মহল্লার শহিদ আমিনের ছেলে সবুজ আলীর সাথে। একযুগ আগে সুখিরও বিয়ে হয়েছিলো একই এলাকার বাটুল মন্ডলের ছেলে আলমগীর হোসেনের সাথে। ৯ বছর ঘর সংসার করার পর আলমগীর দ্বিতীয় বিয়ে করে। রোজিনাকে দ্বিতীয় বিয়ে করায় সুখির সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। এরই এক পর্যায়ে গত তিন বছর আগে সুখির স্বামী আলমগীর তালাক দেয় সুখিকে। এদিকে নির্যাতন সইতে না পেরে সুখি আদালতে মামলা করে। ওই মামলা তুলে নিতে আলমগীর বিভিন্ন সময়ে সুখিকে নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে সুখি বাবার বাড়ি চলে আসে। সেই সাথে আস্থা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন। এদিকে পারিবারিক কলহে সুমির স্বামী সবুজ আলীও নাটোর কোর্টে গিয়ে গত ১৬ জানুয়ারী তার স্ত্রী সুমিকে তালাক দেয়। গত শুক্রবার রাতে তার দুই বোনের সাবেক স্বামীরা এবং আলমগীরের দ্বিতীয় বউ রোজিনা সহ ৫ জন সুখির প্রতিষ্ঠানে এসে মারপিট করে।
দু’বোন সুখি ও সুমি অভিযোগ করে বলেন, ডিভোর্স পেপারে স্বাক্ষর এবং ইতিপুর্বে দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য শুক্রবার রাতে জোড়পুবর্ক সাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে সবুজ ও আলমগীর। সাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে ছোট বোনকে সুমিকে মারধর করতে থাকে সবুজ। এসময় বাধা দিলে সবুজ, আলমগীর ও তার আলমগীরের ২য় স্ত্রী রোজিনাসহ সকলে মিলে সুখির দুই হাত ব্লেড দিয়ে কেটে দেয়। একই সময়ে চুল কেটে চুল পুড়িয়েও দেয় তারা। এসময় সুমিকেও মারপিট করে তারা।
এব্যাপারে জানতে সবুজ ও আলমগীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাদেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তাদের দু’বোনের সাথে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। বিচ্ছেদের পর আর কোনও সম্পর্ক নেই তাদের সাথে। তারা কেন এমন করতে যাবেন।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল মতিন জানান, এ সংক্রান্ত বিষয়ে জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।