নাটোর অফিস ॥
ঘুষ দিতে না চাওয়ায় নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসে এক নারী অফিস সহায়ক (পিয়ন) জমেলা বেগমের হাতে লাঞ্চিত ও আশোভন আচরণের শিকার হয়েছেন বিপ্রবেলঘড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র (বিএনপি) চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাজাহান আলী ।
বুধবার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে নির্বাচন অফিসারের সামনেই এমন ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ।
ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরের দিকে নলডাঙ্গা উপজেলার ৫ নং বিপ্রবেলঘড়িয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাহান আলী তাঁর কয়েকজন সমর্থককে নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান ।
এ সময় উপজেলা নির্বাচন অফিসের বিতর্কিত নারী অফিস সহায়ক (পিয়ন) জমেলা বেগম তাঁর হাত থেকে মনোনয়ন পত্র নিয়ে দুই হাজার টাকা দাবী করেন । এতে দাবীকৃত ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অফিস সহায়ক জমেলা বেগম অশোভন আচরণ করেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে জানাতে গেলে জমেলা বেগম সেখানে প্রবেশ করে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকদের ধাক্কা দেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুস সালামের সামনেই পিয়ন জমেলা বেগম জুতা খুলে মারতে উদ্দ্যত হন এবং অশোভন আচরণ করেন । ঘটনার সময় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে তা মুহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হয় । এক পর্যায়ে উপজেলা জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ শাহাজাহান আলী বলেন, গত ৫ ডিসেম্বর মনোনয়ন পত্র তোলার দিন অফিস সহায়ক জমেলা বেগম আমার কাছে টাকা দাবী করে । ওই দিন তাকে বুঝিয়ে- সুজিয়ে মনোনয়নপত্র তুলে নিয়ে আসি । আজ মনোনয়ন জমা দিতে গেলে পূণরায় দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবী করে । আমি দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে নির্বাচন অফিসারের সামনেই আমাদের সাথে অশোভন আচরণ করেন ।এমনকি পাঁয়ের জুতা খুলে মারতে উদ্দ্যত হয় । বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি উপজেলা নির্বাচন অফিসারের নিকট লিখিত ভাবে জানিয়েছি।
এদিকে ওই নারী অফিস সহায়ক জমিলা বেগম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই যে ব্যক্তির সঙ্গে কোন অশোভন আচরণ করিনি এবং তার কাছে কোনো প্রকার ঘুষের টাকা দাবী করিনি। বরং মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসা ওই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অফিসের ভেতর বেশি লোক প্রবেশ নিষেধ করেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হন এবং চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাথে আসা লোকজন আমার শরীরে হাত দেয় । আমি সেটার প্রতিবাদ করেছি মাত্র । তাদের দেওয়া অভিযোগমিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যাতা করে বলেন, একজন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং তাঁর কর্মী সমর্থকের সাথে একজন নারী অফিস সহায়ক যে অশোভন আচরণ করেছেন তা কাম্য নয় । আমি নিজেই হতবাক হয়েছি । এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।