নবীউর রহমান পিপলু:আজ ১ সেপ্টেম্বর। নাটোরের মানুষ প্রতিবছর এই দিনটিকে স্থানীয় চার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান রেজা , গোলাম রব্বানী রঞ্জু, সেলিম চৌধুরী ও আমিরুল ইসলাম বাবুলকে শ্রদ্ধাভরে স্মরন করতে দিনটিকে শোকের দিন হিসেবে পালন করে থাকে।
উনিশ একাত্তর সালের এই দিনে পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার,আলবদর বাহিনীর হাতে শহীদ হন মজিবর রহমান রেজা ও গোলাম রব্বানী রঞ্জু । রাজাকার-আলবদররা রেজা ও রঞ্জুকে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা এলাকা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। মামলা করার পরও এদের হত্যাকারীর বিচার হয়নি আজও।
নাটোরের তৎকালীন ছাত্রলীগ ও সংগ্রাম পরিষদ নেতা মজিবর রহমান রেজা ও গোলাম রব্বানী রঞ্জু ভারতে প্রশিক্ষন শেষে নাটোরের গুরুদাসপুর এলাকায় ঢুকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন। পাকিস্থানী দোসরদের প্রতরনার শিকার হয়ে রাজাকার-আলবদর বাহিনীর হাতে ধরা পরেন তারা। শরীরে পেরেক ঢুকিয়ে ও সিগারেটের ছাঁকা দিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর ১ সেপ্টেম্বর তাদের হত্যা করা হয়। শহরের কানাইখালী এলাকায় তাদের দাফন করা হয়। অপর দুই শহীদের মধ্যে আমিরুল ইসলাম বাবুলকে ২০ এপ্রিল পাকসেনারা ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে এবং সেলিম চৌধুরী ১ ডিসেম্বর নওগাঁর রণাঙ্গনে শহীদ হন। মৃতদেহ না পাওয়ায় এই দুই শহীদের পরিধেয় কাপড় একই স্থানে কবর দিয়ে প্রতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরন করা হয়। এই চার বীরকে শ্রদ্ধা জানাতে সরকারীভাবে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়না। শুরুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সহ নানা সংগঠন দিন দিনটিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরন করলেও এখন সে সংখ্যা কমে গেছে। প্রতিবছর পারিবারিকভাবেই এই চার শহীদকে শ্রদ্ধাভরে স্মরন করা হয়। এবার নাটোর পৌরসভার পক্ষ থেকে পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে চার শহীদের কবরস্থান।
স্বাধীনতার পর ২০০৮ সালে শহীদ মজিবর রহমান রেজার ভাই বিপ্লব বাদি হয়ে রেজা ও রঞ্জুর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করলেও মামলার কোন অগ্রগতি নেই। শহীদদের পরিবার সহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা চিহ্নিত রাজাকার আলবদরদের বিচার দাবি করেছেন।
এদিকে শহীদ আমিরুল ইসলাম বাবুলের পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে শহীদ বাবুলকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।