নাটোর অফিস॥
চলতি এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার পেড়াবাড়িয়া দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রে ১৫ ছাত্রী পরীক্ষার শুরু থেকে অনুপস্থিত রয়েছেন। এই পরীক্ষার্থীদের সকলেই বাগাতিপাড়া মহিলা মাদরাসার ছাত্রী। গত ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ পর্যন্ত প্রতি গ্রুপে দুটি বিষয়ের অনুষ্ঠিত কোন পরীক্ষায় বাগাতিপাড়া মহিলা মাদরাসার এই ছাত্রীরা অংশ নেয়নি। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হাদিস শরীফ বিষয়ের পরীক্ষাতেও তারা অনুপস্থিত ছিলেন। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট মাদরাসা প্রধান জানিয়েছেন, করোনা মহামারিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সব পরীক্ষার্থীদের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় কেউ পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, চলতি এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বাগাতিপাড়া উপজেলার পেড়াবাড়িয়া মাদরাসা কেন্দ্রে ৫টি মাদরাসার পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষা অংশ নিচ্ছে। এসব মাদরাসার মোট ৯৮ জন শিক্ষার্থীর ওই কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা। কিন্তু প্রতিদিন কেন্দ্রে ৮৩ জন উপস্থিত হয় । অনুপস্থিত ১৫ পরীক্ষার্থীর সবাই বাগাতিপাড়া মহিলা মাদরাসার শিক্ষার্থী। ওই মাদরাসা থেকে এ বছর মোট ১৫ শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা। কিন্তু কেউই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। মাদরাসা সুপার ওই সব শিক্ষার্থীর প্রবেশ পত্রও সংগ্রহ করেছেন।
কেন্দ্র সচিব ইব্রাহিম হোসাইন জানান, তার কেন্দ্রের অধীনে ৫টি মাদরাসার ৯৮ জন পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র পেয়ে সংশ্লিষ্ট সুপারদের কাছে সবগুলো বিতরণ করা হয়। বাগাতিপাড়া মহিলা মাদরাসা সুপারকেও ১৫ জন পরীক্ষার্থীর সবগুলোর প্রবেশপত্র দেয়া হয়েছে। তবে প্রতি পরীক্ষার্থী ৩০০ টাকা কেন্দ্র ফি প্রদানের কথা থাকলেও ৪ হাজার ৫০০ টাকার ফি বকেয়া রেখে পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে প্রবেশপত্র দেয়া হয়েছিল। এদিকে মানবিক গ্রুপের আল কোরআন এবং হাদিস শরীফ দুটি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু ওই মাদরাসা থেকে কেউ অংশ নেয়নি। এ বিষয়ে মাদরাসার সুপারের সাথে যোগাযোগ করেও কোন ফল হয়নি।
এব্যাপারে বাগাতিপাড়া মহিলা মাদরাসা সুপার আব্দুর রউফের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চলতি বছরে তার মাদরাসা থেকে ১৫ জন ছাত্রীর পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারনে সব ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যাওয়ায় কেউই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। তবে তিনি প্রবেশ পত্র পেয়ে এসব পরীক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের সকলকে পরীক্ষায় অংশ নিতে বলেছিলেন । কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি।
বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, উপজেলার বেশ কয়েকটি মাদরাসার কার্যক্রম নিয়ে কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই সব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন জনের নাম তালিকা করে প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। বাগাতিপাড়া মহিলা মাদরাসা ওই ধরনের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি। ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের দেওয়া বক্তব্যের বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।