নাটোর অফিস ॥
নাটোরের নলডাঙ্গা থেকে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে কালু (৪০) নামে এক মুদি দোকাণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার মোমিনপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যু হয়। নিহত আব্দুর রাজ্জাক ওই গ্রামের আবদুল হামিদ খানের ছেলে। এদিকে এই মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হওয়ায় এলাকাবাসী নিহতের স্ত্রী সালমা বেগমকে (৩৫) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে পুলিশ আটক সালমা বেগম সহ তার ছেলে হৃদয় (১৬)এবং নিহতের ভাই সেন্টু সহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে নিহতের বাবা আব্দুল হামিদ খান অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলের সঙ্গে সংসার করতে চাইত না স্ত্রী সালমা বেগম। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হতো। স্ত্রী হয়ে স্বামীকে নির্যাতন করতো এবং মাঝেমধ্যে স্বামীর সাথে এক ঘরে ঘুমাতো না। তার ছেলেকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
নলডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,নিহত আব্দুর রাজ্জাক একজন মুদি দোকানি হলেও কৃষি শ্রমিকের কাজ করেন। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক আব্দুর রাজ্জাক শুক্রবার রাত ১১টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরে খাবার খেয়ে স্বামী-স্ত্রী এক সাথে ঘুমাতে যান। রাত দেড়টার দিকে স্ত্রী সালমা বেগম তার স্বামী মারা গেছে চিৎকার করতে থাকেন । তার চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন সহ প্রতিবেশীরা ছুটে এসে আব্দুর রাজ্জাককে মৃত অব¯ায় দেখতে পান। এসময় আব্দুর রাজ্জাকের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে হইচই শুরু হয়। স্ত্রী সালমা বেগম তার স্বামীকে হত্যা করেছে এমন অভিযোগ এনে স্থানীয় লোকজন তাকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী নিহতের স্ত্রী সালমা বেগমকে পুলিশে সোপর্দ করে। এসময় পুলিশ নিহত আব্দুর রাজ্জাকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে পুলিশ এই ঘটনার রহস্য জানতে ছেলে হৃদয় ও নিহতের দুই ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত তার মৃত্যুর রহস্য জানা যায়নি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলেই এর আসল রহস্য জানা যাবে। প্রাথমিক তদন্তকালে নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে । এটি স্বাভাবিক মৃত্যু না শ্বাসরোধে হত্যা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্ত্রী-ছেলে ও ভাইদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক এবং পরিবারের লোকজনের তথ্যমতে মৃত্যুর কারন জানা গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ওসি বলেন, এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।