নাটোর অফিস॥
করোনা সংক্রমন কমে যাওয়ার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্টান খুললেও অনেক শিক্ষার্থী এখনও স্কুলমুখি হয়নি। করোনা কালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার জীবন শুরু করেছেন্। এদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা বেশী। ছেলেদের কেউ কেউ সংসারে সহায়তা করতে অর্থ আয়ের জন্য দিন মজুরি সহ বিভিন্ন কাজ বেছে নিয়েছেন। এতে করে ধারনা করা হচ্ছে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ঝড়ে পড়বে। তবে ঝড়ে পড়াদের অনেকেই শিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তাদের অনেকেই পরিবেশ ও পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নিবেন।
কথা হয় জেলার সিংড়া উপজেলার চক সিংড়া এলাকার মোঃ রোকনের সাথে। উপজেলার কতুয়াবাড়ি হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ রোকন। করোনার কারনে কর্মহীন হয়ে পড়া বাবার সংসারে সহায়তা করতে দিনমজুরির কাজ বেছে নিয়েছেন। বর্তমানে সে মাটি বহনকারী ট্রাকের হেলপার হিসেব কাজ করছে। সে অচিরেই স্কুলে যাওয়া শুরু করবে। একই এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলার আনোয়ারা পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র নাসিম মাহমুদ জানান, সে করোনার মধ্যে পাইপ মিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। তিনি লেখা পড়ার পাশাপাশি এই কাজ চালিয়ে যেতে চান। পরিবেশ ও পরিস্থিতি দেখে ২/৩ দিনের মধ্যে তিনি স্কুলে যাওয়া শুরু করবেন।
জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার এরশাদ উদ্দিন আহমেদ জানান, জেলায় প্রাথমিক শিক্ষার্থী রয়েছে ১ লাখ ৬৯ হাজার জন। এরমধ্যে প্রথম দিন ৫ম ও ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হয়েছে। ইংরেজী ,বাংলা ও অংক বিষয়ে তিনটি ক্লাস নেওয়া হয় তাদের। জেলায় এই তিনটি ক্লাসের মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ৪৭ হাজার ১৯৩ জন। প্রথমদিন ক্লাসে উপস্থিত হয় ৩৪ হাজার ৬৪১ জন। উপস্থিতির হার ছিল শতকরা ৭৩ শতাংশ। অথাৎ অনুপস্থিত ছিল শতকরা ১৭ শতাংশ। এদের কেউ কেউ সজনদের বাড়িতে বেড়াতে গেছে বলে অভিভাবকদের অনেকেই জানিয়েছেন। যেহেতু পুরোদমে ক্লাস চালু হয়নি,সেকারনে অনেক অভিভাবক পরিস্থিতি দেখে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চান। সব শ্রেণীর ক্লাস পুরোদমে শুরু হলে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত অনুপস্থিতি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ বলেন, জেলায় মাধ্যমিক,কলেজ ও মাদ্রাসা সমুহে মোট শিক্ষা রয়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৭৫ জন। এর মধ্যে মাধ্যমিকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ২৯ হাজার ১০৪ জন, কলেজে শিক্ষার্থী রয়েছে ৪০ হাজার ৮৫৯ জন এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৯১২ জন। এর মধ্যে সোমবার ২১ সালের ১০ম শ্রেণী ,২২ সালের ১০ শ্রেণী ও ৭ম ¤্রণেীর শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল ৪৮ হাজার ৫০০ জন। এই তিনটি শ্রেণীতে মোট শির্ক্ষার্থীর সংখ্যা ৫১ হাজার ৬শ জন। তিনি আরও বলেন, জেলায় করোনা পরবর্তী স্কুল ,কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার ৮০ শতাংশের মত। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরোপুরি ক্লাস চালু হলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।