নাটোর অফিস॥
নাটোরে উৎসবমুখর পরিবেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে কোভিড-১৯ গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলার নলডাঙ্গা উপজেলা বাদে জেলার ৬ টি উপজেলার ৪৫ টি ইউনিয়ন ও ৭ টি পৌরসভায় ২৫ ঊর্দ্ধো বয়সী নারী-পুরুষসহ প্রতিবন্ধীদের এই টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। সকাল থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে মানুষ টিকা নিতে স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ নেয়। আজ শনিবার সকাল ৯টায় নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়ার শিবদুরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল এবং জেলা প্রশাসক শামীম আহেমদ।। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহবুবুর রহমানসহ সরকারী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
এই গণটিকা কার্যক্রমে ২৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে এই টিকা নিতে হচ্ছে। টিকাদান চলবে সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত। টিকা গ্রহণকারী নানা বয়সী নারী পুরুষরা জানান,নিজের গ্রামে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা হওয়ায় তারা সহজেই টিকা নিতে পারছেন। সদরে গিয়ে টিকা নিতে যাওয়ার ইচ্ছা কখনই হয়নি। গ্রাম পর্যায়ে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করেন সকলেই। হুইল চেয়ারে বসে আগন্তুক শারিরিক প্রতিবন্ধী মানিক সরকার বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে টিকা নিতে এসেছি। গ্রাম পর্যায়ে টিকাদানের ব্যবস্থা করায় টিকা গ্রহন অনেক সহজ হয়েছে। বিনামূল্যে দোর-গোড়ায় টিকাদানের ব্যবস্থা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমাদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।
টিকা গ্রহনের জন্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়ানো গৃহিনী নূরজাহান বেগম বলেন, টিকা নিতে কোন ভয় পাচ্ছি না। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আমাদেরকে সব কিছু খুলে বলেছেন। আমাদের বাড়ি থেকে আমার শ্বশুর, শ্বাশুরি এবং স্বামীও এসেছেন।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়া বৃদ্ধ শামসুল হক টিকা গ্রহনের জন্যে লাইনে একটি চেয়ারে বসে বলেন, সরকার আমাদের বাড়ির কাছে টিকা গ্রহনের সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা শেখ হাসিনার কাছে ঋনী।
সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান জানান, প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য করানোর ৬০০ টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে নিয়মিত সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) কেন্দ্রে নিয়মিত টিকা কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, প্রথম দিন বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও গ্রামীণ নারীদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও জেলার সাতটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায় দুই জন করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োজিত করা হয়েছে। তিনি সহ মোট ২২ জন কর্মকর্তা গণটিকা কার্যক্রম তদারকিতে রয়েছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন. মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জনগনের জীবন রক্ষার জন্য টিকা কার্যক্রম গ্রাম পর্যায়ে এনেছেন। গ্রামের মানুষদের দোর গোড়ায় এসে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে যা বিরল। এই কার্যক্রমে প্রতিটি ইউনিয়নের একটি করে কেন্দ্রে প্রতিদিন ৬শ জনকে টিকা দেওয়া হবে। আইডি কাড দেখিয়ে টিকা নিতে পারবেন।