বড়াইগ্রাম অফিস
মা আমাদের পাকা ঘর দিয়েছেন,পানির জন্য টিউবয়েল দিয়েছেন, বিদ্যুৎ দিয়েছেন, ঘুমানোর জন্য দিয়েছেন খাট আবার অভাবের সময় খাবারও দিচ্ছেন। এটা একমাত্র মায়ের বাড়ীতেই সম্ভব। এভাবেই কথা বলছিলেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের উপলশহর গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পে বাড়ী পাওয়া ৬৫ পরিবারের গৃহবধু শীমা, স্বর্ণা, আদরী সহ প্রায় সকলেই।
শুক্রবার সকালে ওই আশ্রয়ন প্রকল্প দেখতে যান নাটোরে রনবাগত জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। এসময় তিনি আশ্রয়ন প্রকল্পে থাকা শিশুদের জন্য প্রকল্প এলাকায় নির্মিত শিশুপার্ক উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি করোনা কালে কর্মহীন থাকায় প্রতিটি ঘরের দরজায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের খাবার ও নগদ ৫০০ টাকা করে পরিবার প্রধানদের হাতে তুলে দেন। পরে তিনি গোটা আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকার পরিবেশ সহ অন্যান্য ভৌত কাঠামো পরিদর্শণ করেন। এসময় জেলা প্রশাসকের সাথে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল ইসলাম, বড়াইগ্রামের ইউএনও জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজীম নাহিদমইভা, জেলাম ত্রাণ মকর্মকর্তা সালাউদ্দিন আহমেদ, ইউপি চেয়ারম্যান মোমিন আলী, পিআইও আব্দুর রাজ্জাক, ইউপি সদস্য নুর ইসলাম সিদ্দিকী প্রমুখ।
শিশু পার্কে খেলায় মত্ত শিশু সৌরভ, দুলাল, চামেলী, শিউলী বলেন, আমরা সবচেয়ে খুশি খেলার জিনিস পেয়ে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবো। তিনি যেন অনেকদিন বেঁচে থাকেন। তাহলে আমাদের কোন কষ্টই তিনি রাখবেন না। আমরা খুশি থাকলে, সবাই খুশি থাকবে, দেশ খুশি থাকবে। আশ্রয়ন প্রকল্পের গৃহবধু শীমা বেগম বলেন, সব কিছুই স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। পাঁকা ঘরের স্বপ্ন পূরণের সাথে সাথে সবই হয়ে যাচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মায়ের আর্শিবাদেই এমনটা হচ্ছে বলে শুনেছি। তার ইচ্ছায় আমাদের ইউএনও স্যার রাত-দিন পরিশ্রম করে আমাদেরকে এই সুন্দর ব্যবস্থা করে দিলেন। আল্লাহ যেন তাদেরকে হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখেন। পরিবার প্রধান ভ্যান চালক ইদ্রিস আলী বলেন, বড়লোক যাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে, শিশু পার্কে যেতাম। তখন খুব মন খারাপ হতো নিজের সন্তানদের কথা ভেবে। এবার আমাদের ঘরের সাথেই শিশু পার্ক করে দিলেন ইউএনও স্যার। কিযে ভালো লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারোবনা।
ইউপি চেয়ারম্যান মোমিন আলী বলেন, এখানে থাকা প্রতিটি পরিবারের সুখ-দুখের খোজ নিয়মিত রাখতে নিজে এবং ইউপি সদস্যর মাধ্যমে যোগাযোগ রাখি।
ইউএনও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বড়াইগ্রামে দুই ধাপে মোট ৩২৬টি পরিবারকে ঘর দেয়া হয়েছে। উপলশহরে একসাথে ৬৫টি পরিবার বাস করছেন।এদের পরিবার প্রধানদের কর্মসংস্থানের পাশাপশি নারীদেরকে গার্মেন্টস সহ নানামূখী হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ দিয়ে আতœনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা হবে। প্রতিটি পরিবার যাতে করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠে তার জন্য প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা করা হবে। তিনি আরও বলেন, ঘরগুলো নির্ধারিত ডিজাইন মোতাবেক উন্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে গর্ত ভরাট করে নতুন মাটিতে ঘর করতে গিয়ে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের অন্যতম হচ্ছে এটি। এখানে আশ্রয় নেয়াদের সকল সহযোগিতা দিতে জেলা-উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত। অবকাঠামো সহ যেকোন ত্রুটি বিচ্যুতি ধারা পড়লে দ্রুততার সাথে তা সমাধান করা হবে। এবিষয়ে তিনি সচেতন নাগরিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।