নাটোর অফিস ॥
নাটোরের লালপুরের সেই খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সরকারি বাসভবনের পাশের কক্ষ থেকে ২০০ বস্তা গম উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই কর্মকর্তা বাগাতিপাড়া থানায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা রোকুনুজ্জান রোকন ও তার ২ সহযোগীর বিরুদ্ধে তাকে স্থানীয় এমপির বাসভবনে ডেকে নিয়ে লাঞ্ছিত করার মামলা করে আলোচনায় আসেন। ঘটনাটি জেলা জুড়ে ভাইরাল হয়। ওই ঘটনায় রোকনের দুই সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু ওই মামলা দায়েরের কয়েক ঘন্টার মধ্যে সেই খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার সরকারি বাসভবনের পাশের একটি পরিত্যক্ত বাসা থেকে ২০০ বস্তা সরকারি গম উদ্ধার করা হয়। এই সরকারি গম উদ্ধারের পর তাকে নিয়ে আবারও আলোচনার ঝড় ওঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাযায়, লালপুর উপজেলার গোপালপুর খাদ্য গুদাম এলাকায় সরকারি বাসভবনে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বাস করেন। তার পাশেই কর্মচারীদের জন্য আরো দু’টি সরকারি বাসভন রয়েছে। এর একটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। শুক্রবার দুপুরের পর বিভিন্ন মাধ্যমে ওই খাদ্য গুদাম কর্মকতার সরকারি বাসভবনে গুদামের প্রায় ২০০ বস্তা গম অবৈধভাবে মজুদ রাখা আছে। এমন খবর পেয়ে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার শাম্মী আক্তার ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবিন্দ্র লাল চাকমা ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পান। তাদের উপস্থিতিতে গুদাম খাদ্য কর্মকর্তার পাশের নিরাপত্তা রক্ষীর পরিত্যক্ত বাসভবনে মজুদ ১৯০ বস্তা সরকারি গম উদ্ধার করে গুদামে মজুদ রাখা হয়। ওই গমগুরি গুদামের বাহিরে রাখার জন্য কোন কর্মকর্তা অনুমতি পত্র দেখাতে পারেনি সেই গুদাম কর্মকর্তা।
এসময় অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, গুদামে যায়গায় স্বল্পতার কারনে জেলা খাদ্য কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে গমগুলো পরিত্যক্ত ওই বাসায় রাখা হয়েছে।
তবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবীন্দ্রলাল চাকমা তার বক্তব্যকে প্রত্যাখান করে বলেন, ত গম বাসায় রাখার ব্যাপারে তাকে কিছুই জানানো হয়নি। এমনকি গুদামে জায়গার স্বল্পতার বিষয়টিও সঠিক নয়, গুদামে যথেষ্ট জায়গা আছে গম রাখার। উদ্ধারকৃত গম গুদামে রাখা হয়। তিনি আরো বলেন, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ইতিমধ্যে তাকে শোকজ করার জন্য তিনি লালপুর উপজেলা খাদ্য কর্মকতাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) শাম্মী আক্তার সাংবাদিকদের জানান, গোপালপুর সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ২০০ বস্তা সরকারি গম নিরাপত্তা রক্ষীর বাসায় রেখেছেন এমন খবর পাওয়ার পর শুক্রবার দুপুরে সেখানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে গম গুলো পূনরায় গোডাউনে মজুদ করা হয়।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ঘটনাটি তিনি জানার পর বিভাগীয় কমিশনারকে অবগত করেছেন। এ ব্যাপারে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তাকে জানিয়েছেন বলে জানান ।