নাটোর অফিস॥
রেডজোনের নাটোরে ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে করোনা ভাইরাস। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ রোগীর সংখ্যা। গত রোববার দুপুর ১২ টা থেকে সোমবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমনের হার বেড়ে ৬৭.৩০ শতাংশে উন্নীত হয়। নাটোরে যা ছিল এপর্যন্ত সব্বোর্চ্চ হার। এসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে সোমবার বিনামুল্যে করোনা ভাইরাস টেস্টিং বুথের উদ্বোধনের পর। শহরের প্রানকেন্দ্র কানাইখালী এলাকার কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ চত্বরে স্থাপন করা এই করোনা ভাইরাস টেস্টিং বুথে প্রদান করা নমুনার ফলাফলই শংকা বাড়িয়ে দিচ্ছে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ আকারের বিষয়টি। আজ সোমবার দুপুর ১২ টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত চলা এই বুথ এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রদান করা নমুনার ফলাফল ভাবিয়ে তুলেছে সচেতন মহলকে। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাদীন নাটোরের একজন করে মৃত্যু বরন করছেন। গতকাল রোববার করোনায় আক্রান্ত আক্কেল আলী নামে ৩৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এপর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৮ জনের মৃত্যু হয়। লাফিয়ে লাফিয়ে প্রতিদিনই করোনা সংক্রমন বাড়তে থাকায় স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সহ সচেতন ব্যক্তিরা লকডাউনের সুপারিশ করেছেন।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মাহবুবুর রহমান জানান, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস চত্বরের বুথে ১৮ জনের প্রদানকৃত নমুনা পরীক্ষা করা হয় । এতে ১৬ জনের ফলাফল করোনা পজেটিভ আসে। এছাড়া কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ চত্বরে স্থাপন করা বিনামুল্যের করোনা ভাইরাস টেস্টিং বুথে প্রদান করা ৮৩ জনের নমুনার ফলাফলে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে ১৬ জন করোনা পজেটিভ। এছাড়া আরো ৬৭ জনের নমুনা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান শংকা প্রকাশ করে জানান, নাটোরে মানুষ যেভাবে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছে তাতে ভয়াবহ পরিস্তিতির সৃষ্টি হতে পারে। যেহেতু নাটোর পৌর এলাকায় বেশী সংক্রমিত হচ্ছে,তাই শহর এলাকায় লকডাউন দিয়ে পরিস্থিতি সামল দিতে সুপারিশ করেছেন তিনি। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেও নাটোরে বিশেষ লকডাউন দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো: শাহরিয়াজ জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সাথে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, নাটোর জেলায় এপর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত মোট ১৮৯৮ জনের মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ১৫০১ জন। এর মধ্যে ৩৪৫ জন রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে এবং ৩৯ জন সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।