নাটোর অফিস॥
নাটোরে করোনা সংক্রমনের হার ৩০ থেকে ৪৭ শতাংশে বেড়ে যাওয়ায় জনসাধারনের মাঝে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। গত এক সপ্তাহে ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের উদাসীনতায় সংক্রমনের হার বাড়ছে বলে মনে করছেন জেলার করোনা নিয়ন্ত্রন ও প্রতিরোধ কমিটিসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।
সিভিল সার্জন অফিস সুত্রে জানা যায়,গত ২৪ ঘন্টায় শুক্রবার নতুন করে ৪৬ জন করোনা সনাক্ত হয়েছে। ১১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৬ জনের করোনা রেজাল্ট আসে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে কাশেম আলী (৫৪) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন বলে বিভিন্ন সুত্র দাবী করলেও জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, রামেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ১০জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড ও আইসিউতে তারা মারা যান। তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় যে ১০ জন মারা গেছে তাদের মধ্যে পাঁচজনের করোনা পজিটিভ। বাকি পাঁচজনের করোনা উপসর্গ ছিল। তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার আগেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। নিহতদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচজন, রাজশাহীর তিনজন, নাটোরের একজন ও কুষ্টিয়ার একজন। মৃতরা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শীর্ষ মোহাম্মদ, লৎফর রহমান, লাল মোহাম্মদ, গোলেসা বিবি ও নজরুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে রাজশাহী নগরীর শরিফ হোসেন, হুমায়ুন কবির, বাগমারার আব্দুর রহমান ও কুষ্টিয়ার লোকমান হোসেন এবং নাটোরের মোহনপুর এলাকার আবুল কাশেম। কাশেম নাটোরের মোহনপুর এলাকার।
নাটোরের আবুল কাশেমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে নাটোর সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ল্যাব) হাফিজার রহমান জানান, গত ১৫ মে আবউল কাশেম নামে এক ব্যক্তিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পরপরই রাজশাহীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালের রেজিষ্টারে তার ঠিকানা নাটোরের কাফুরিয়া মোহনপুর এলাকার এবং বাবার নাম রওশন আলী লেখা রয়েছে। তবে ঠিকানা খুজে পাওয়া যায়নি এবং শহরের মোহনপুর এলাকায় কোন মৃত্যুর ঘটনা নেই বলে তিনি জানান।
এদিকে নাটোরে করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বেড়ে গেছে। মানুষ করোনা ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহি হয়ে পড়েছেন। এদিকে যারা ইতিপুর্বে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন তারা হাসপাতাল কেন্দ্রে ভির করছেন দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণের জন্য। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তিন দফার পাঠানো টিকা গত বৃহস্পতিবার শেষ হয়ে গেছে। ফলে শংকায় পড়েছেন টিকা গ্রহণকারীরা।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সুত্রে জানাযায় , স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তিন দফায় নাটোরে ব্যাকসিন পাঠিয়েছে ৮৮ হাজার ৭৯৪ ডোজ। প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৬১ হাজার ৯৪৪ জন। পরবর্তীতে বগুড়া ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে কিছু ডোজ এনে প্রদান করা হয়েছে। এখনও প্রায় ২৬হাজার ৮৫০ জনের জন্য দ্বিতীয় ডোজ টিকার প্রয়োজন রয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মিজানুর রহমান জানান,সংশ্লিষ্ট বিভাগ সহ মন্ত্রনালয়ে টিকার জন্য কয়েক দফা পত্র পাঠানো হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে টিকার যোগান পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। নতুন টিকা হাতে পেলেই আপডেট জানাতে পারবেন । তবে সকলকেই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার অনুরোধ করেন তিনি।