নাটোর অফিস ॥
নাটোর জেলায় আগামী ১০ মে গাছ থেকে নিরাপদ আম ও লিচু সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হবে। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ফল উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় জানানো হয় রাসায়নিক পদার্থের অপব্যবহার রোধ করে পরিপক্ক ফল প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুরো মৌসুমে গাছ থেকে বিভিন্ন জাতের আম ও লিচু সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুব্রত কুমার সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাদিম সারোয়ার, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মেহেদুল ইসলাম, আম চাষী সেলিম রেজা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে, জেলায় ১০ মে শুরু হয়ে আম ও লিচু সংগ্রহ কার্যক্রম আগামী ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত চলবে। মোজাফফর জাতের লিচু ১০ মে এবং বোম্বাই জাতের লিচু ৩০ মে সংগ্রহ শুরু হবে। আমের সময়সূচীর শুরুতে ১০ থেকে স্থানীয় গুটি জাতের আম সংগ্রহ শুরু হবে। পরবর্ত্তীতে ২০ মে থেকে গোপালভোগ আম, ২৫ মে থেকে লক্ষণভোগ ও রাণী পছন্দ, ২৮ মে থেকে ক্ষীরসাপাত, ৫ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে মোহনভোগ, ২০ জুন থেকে আ¤্রপালি, হাড়িভাঙ্গা ও ফজলী, ৩০ জুন থেকে মল্লিকা , ১০ জুলাই থেকে বারি-৪, ১৫ জুলাই থেকে আশ্বিনা জাতের আম এবং সর্বশেষ ১৫ আগষ্ট থেকে গৌড়মতি আম সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়সূচীর বাইরে আগে কোন জাতের আম ও লিচু গাছে পরিপক্ক হলে উপজেলা কৃষিবিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে কৃষক বা ব্যবসায়ী গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে পারবেন।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে জেলায় পাঁচ হাজার ৮৫৭ হেক্টর জমি থেকে ৭৯ হাজার ৬৭১ টন আম এবং ৯৮৩ হেক্টর জমি থেকে আট হাজার ৮১৫ টন লিচু উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আম চাষী সেলিম রেজা কোভিড-১৯ লকডাউন পরিস্থিতিতে ফল পরিবহন নিরবচ্ছিন্ন করার ক্ষেত্রে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করার আহ্বান জানান ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে গাছে ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পর ফল সংগ্রহের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা এবং ক্ষতিকর কার্বাইড ও ফরমালিন ব্যবহার না করার জন্যে ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানান
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন,করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকলের বেশী করে শাক-সব্জি ও ফল খাওয়া উচিৎ। দেশীয় সুস্বাদু ফল আম ও লিচু এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ফল চাষীদের ফল সংগ্রহ এবং এর বিপনন ও পরিবহন কার্যক্রমে কোন প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে জেলা প্রশাসন তা নিরসন করবে। ফলের আড়ত এবং বাগানগুলোতে প্রশাসনিক মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান থাকবে বলে জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেন। তবে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ক্ষতিকর স্প্রে থেকে বিরত থাকা এবং ব্যাগিং পদ্ধতি অনুসরণে সমবেত কৃষকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।