মো. আশিকুর রহমান টুটুল, নাটোর অফিস॥
অনাবৃষ্টি, তীব্র তাপদাহ আর শিলাবৃষ্টিতে আমের ফলনকে শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন নাটোরের লাপলপুর উপজেলার আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা। গত কয়েক বছর ধরে নাটোরের লালপুর উপজেলায় ব্যাপক হারে বেড়েছে আমের বাগান। উত্তরাঞ্চলের অন্যতম এই উপজেলায় বিপুল পরিমাণ জমিতে আমের বাগান গড়ে উঠেছে। এবার গাছে গাছে ৯৫ শতাংশ মুকুল দেখে আশায় বুক বেঁধে ছিলেন আম চাষি ও ব্যাবসায়ীরা, কিন্তু টানা অনাবৃষ্টি ও তাপদাহের কারণে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। কৃষি বিভাগ এবার বাম্পার ফলনের কথা বললেও আম চাষি ও বাগান মালিকদের কেউই মানতে পারছেন না এই তথ্য। আমের মুকুল আসার সময় আবহাওয়া কিছুটা অনুকুলে থাকলেও আমের গুটি আশা সময় তীব্র তাপদাহও মৌসুমের শুরুতে হঠাৎ শিলাবৃষ্টির প্রকপে গাছ থেকে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। প্রতিকুল আবহাওয়ার কারনে আম চাষীদের রঙ্গীন স্বপ্ন যেনো এক নিমেশেই মলিন হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে,‘এই উপজেলায় ১ হাজার ৮শত ৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের বাগান রয়েছে। এই সকল জমি থেকে হেক্টর প্রতি ১৫ মেট্রিকটন হিসেবে ২৭ হাজার ৭৫ মেট্রিকটন আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্র্ধিারণ করা হয়েছে। যা থেকে ১৬শ টাকা মন হিসেবে ১ হাজার কোটি টাকার আম বিক্রয় হবে।’
উপজেলার আম ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন জানান, ‘তার এই বছর ১৩ বিঘা বিভিন্ন জাতের আমের বাগান কেনা আছে। আম গাছে মুকুল ও গুটি ভালো এসেছিলো কিন্তু তীব্র খরা ও শিলাবৃষ্টিতে তার আম বাগানের আমের সব গুটি ঝরে যাচ্ছে। যে বাগানের আম ২ লক্ষ টাকায় বিক্রয় করতেন এখন সেই বাগানের আম ৫০ হাজার টাকাতেও বিক্রয় করতে পারবেন না। আম বিক্রয় করে লাভ তো দুরের কথা এবার তার অনেক টাকা ক্ষতি হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।’
স্থানীয় আমচাষী আব্দুল করিম বলছেন,‘এ বছর আমগাছে মুকুল আসার সময় পর্যন্ত আবহাওয়া মোটামুটি অনুকূলে ছিল। এরই মধ্যে মুকুল থেকে গুটি বেরিয়েছে, কিন্তু অনাবৃষ্টি ও দাবদাহে গুটি ঝরে যাচ্ছে। বাগানে হালকা সেচ দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করছি। এবছর আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।’
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম আমের গুটি ঝরে যাওয়ার কথা স্বিকার করে বলেন,‘ অতি খরার কারনে অনেক বাগানে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষক পর্যায়ে আম বাগনে নিয়েমিত সেচ ও ছোট আম গাছ গুলিতে পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বৃষ্টি হলে আমের গুটি ঝরা বন্ধ হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।’