নাটোর অফিস॥
লালপুরের মানুষ এখন চন্দনা নদীর মাটি আতংকে ভুগছেন। এলাকার উন্নয়নসহ মনুষের প্রয়োজনে ভরাট হয়ে পড়া চন্দনা নদীর খনন কাজ শুরু হয় সম্প্রতি। খনন কাজ শুরু হওয়ার পর এলাকার মানুষ খুশী হন। কিন্তু খনন করা মাটি নদী সংলগ্ন ফসলি জমিতে ফেলার কারনে বিপাকে পড়েন নদী তীরবর্তী জমির মালিকরা। খননের মাটি ফেলার কারনে ইতিমধ্যে কয়েকশ বিঘা জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আম সহ বিভিন্ন ফল বাগান। নিজের বাগানের ফলগাছ মাটিতে ডুবে থাকায় এবং গাছ কেটে বাগানে মাটি ফেলায় সহ্য করতে পারেননি আড়বাব গ্রামের ইয়াকুর আলী নামে এক কৃষক। বাগানের সর্বনাশ দেখে সেখানেই মারা যান তিনি। রোববার (২৫) এপ্রিল সকালে ওই নদী তীরবতী আমবাগান দেখতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেননি ইয়াকুব আলী। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি সেখানেই মারা যান। এই ঘটনা এলাকার মানুষদের মাঝে চাপা ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ ,সম্প্রতি চন্দনা নদী খননের মাটি ফেলার জন্য নদী তীরবর্তী গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে। এব্যাপারে অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছেনা।
এব্যাপারে কথা হয় আড়বাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার সাথে। তিনি বলেন, নিজের বাগানের সর্বনাশ দেখে ঘটনাস্থলেই মারা যান ইয়াকুব আলী। এমন বিস্তর অভিযোগ রয়েছে এলাকার মানুষদের।
স্থানীয় সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিরুন বিবি বলেন, তারও কয়েকবিঘা জমি চন্দনা নদীর মাটিতে গিলে খেয়েছে। মাটি তার প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করেছে।
এলাকার ইসলাম,বাদল,কলিম উদ্দিন সহ অনেকেই জানান,তারা এখন চন্দনা নদীর মাটি আতংকে থাকেন। কখন কার জমি মটির নিচে চলে যায়। যারা মাটি খননের কাজ করছে তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলাম বকুলের নাম ভাঙ্গিয়ে নদী তীরবর্তী জমির গাছপাড়া কেটে ফেলছে।
লালপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী জানান, বরেন্দ্র বহুমুখি প্রকল্পের আওতায় এই নদী খনন করা হচ্ছে। সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের সমর্থনপুষ্টরা এই নদী খনন করছে। তারা ক্ষমতার দাপট দেকিয়ে নদী থননের মাটি বেপরোয়াভাবে ফসলি জমিতে ফেলছে। সম্প্রতি নদীতরিবর্তী জমির গাছপাটা কেটে মুড়িয়ে ফেলা হচ্চে। কেউ প্রতিবাদ জানালে তাকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। বিষয়টি ইউএনওকে জানানোর পরও কোন প্রতিকার পায়নি ক্ষতিগ্রস্থরা।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শাম্মী আক্তার বলেন, গতকাল পরিষদের মিটিংয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান বিষয়টি সম্পর্কে বলেছেন। জমিতে মাটি ফেলা বা গাছ কাটার কোন অধিকার তাদের নেই । বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া কৃষক ইয়াকুব আলীর মৃত্যুর বিষয়টি তিনি জানেননা বলে জানান।
এব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলাম বকুলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,এবিষয়ে তিনি কিছুই জানেনা। বা এবিষয়ে ভুক্তভোগীদের কেউ তার কাছে অভিযোগ করেনি। তার নির্বাচনী এলাকার সব মানুষ তার সমর্থক ও নিজস্ব লোক। এক ¤্রনেীর সুবিধাভোগী মানুষ ষুবিধা বঞ্ছিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।