নাটোর অফিস ॥
ট্রলি না পাওয়ায় নাটোর সদর হাসপাতালের এক ওয়ার্ড বয়কে করাসহ সিনিয়র ৩ স্টাফ নার্সকে রোগীর সজনরা লাঞ্ছিত করায় প্রায় ঘন্টাব্যাপী কর্মবিরতি পালন করেছে হাসপাতালের কর্মচারীরা। শনিবার সকাল ৮ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করে। পরে রোগীর সজনরা করজোরে ক্ষমা প্রার্থনাসহ মুচলেখা দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের কর্ম বিরতি পালন করা হয়নি বলে দাবি করেছেন। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা কিছু সময় জটলা করে ঘটনার বর্ননা দিচ্ছিলেন বলে জানান হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডাঃ পরিতোষ কুমার রায়।
হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শি সুত্রে জানাযায়, শনিবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটের সময় মনোয়ারা বেগম (৪৯) নামে শ্বাসকষ্ট,জ্বর ও উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত শহরের উপরবাজার এলাকার এক মহিলা রোগীকে নাটোর সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয়। রোগীনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে হাসপাতালের ইয়োলো জোন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রোগীর ভর্তির কাগজপত্র নিয়ে তার সজনরা রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোন ট্রলি না পেয়ে হাঁটিয়ে ওয়ার্ডে নিয়ে যান। এসময় জাকি-উদ-দৌলা,ফাতিম আনজুম তামান্না ও রুমা নামে রোগীর তিন সজন ওয়ার্ডে কর্মরত ওয়ার্ড বয় সেলিম ও স্টাফ নার্সদের উদ্দেশ্য করে অশোভন ভাষায় গালিগালাজ করেন। প্রতিবাদ করলে তারা ওয়ার্ড বয় সেলিমের ওপর চড়াও হয়ে কিলঘুষি ও লাথি মারেন। এসময় ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স নাজমা বেগম ছুটে গেলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয়। একই সময়ে পাশের ওয়ার্ড থেকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে আসা মাহফুজা ও রেনু নামে দুই স্টাফ নার্স এগিয়ে গেলে তাদেরও লাঞ্ছিত করা হয়। এঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অন্যান্য ওয়ার্ডে কর্মরত নার্স এবং ওয়ার্ড বয়সহ অন্যান্য কর্মচারীরা। খবর পেয়ে সদর হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডাঃ পরিতোষ কুমার রায় ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মনজুর রহমানসহ কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক। তারা ঘটনা শুনে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় রোগীর সজনরা আরও বেশী উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এপর্যায়ে পুলিশে খবর দেয়া হলে নাটোর সদর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল মতিন ঘটনাস্থলে গিয়ে হাজির হয়ে উভয়ের বক্তব্য শোনেন। অবশ্য পরে রোগীর সজনরা ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করা সহ করজোরে ক্ষামা চাইলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
ইত্যবসরে রোগীর সজনদের মতামতের ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়।
হাসপাতালের আরএমও ডাঃ মনজুর রহমান জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে সাড়ে ৮ টার মধ্যে এই অপ্রিতিকর ঘটনাটি ঘটে। ওই সময়ে ডিউটি পরিবর্তন হচ্ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে অবগত করা হয়।
হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডাঃ পরিতোষ কুমার রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রোগীর সজনরা ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এনিয়ে কোন কর্মবিরতি পালন করা হয়নি। বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা ঘটনার সুষ্ঠ ব্যবস্থার দাবি করে কিছু সময় একে অপরকে ঘটনার বর্ননা দিছিলেন।