নাটোর অফিস ॥
করোনা ভাইরাসে দেশের সংক্রমিত ৩১জেলার মধ্যে উত্তরের জেলা নাটোরের স্থান ২৯তম। স্বাস্থ্যবিধি না মানা এবং শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত না হওয়ার কারনে দ্রুতই সংক্রমিত হচ্ছে মানুষ। গত পাঁচ দিনে একজন ব্যাক কর্মকর্তা ও একজন স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু হওয়ার পাশাপাশি সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জেলা সিভির সার্জন অফিস সুত্রে জানাযায়,গত কয়েকদিনে ১৩০৯ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এরমধ্যে ১৯৬ জন হোম কোরেন্টাইনে এবং ৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ অবস্থায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি করোনা ভাইরাস সংক্রমন হার বৃদ্ধি ঠেকাতে শতভাগ মাস্ক পরিধানের ওপর জোর দিতে জেলা জুড়ে সচেতনমুলক সভা করাসহ মাস্ক বিতরণ শুরু করেছে। এছাড়া সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই সাথে লালপুরের গ্রীণ ভ্যালি বিনোদন কেন্দ্রসহ জনসমাগম বেশী হয় এমন পিকনিক স্পট বন্ধেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি আবশ্যিকভাবে পরিপালনের অনুরোধ করা হচ্ছে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার হুঁশিয়ারীও করা হয়েছে জেলা প্রশাসন থেকে।
বৃহস্পতিবার শহরের কানাইখালি এলাকায় সচেতনমুলক সভা শেষে মাস্ক বিতরণ করা হয়। সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ, পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান, পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ডা. কাজী মিজানুর রহমান বলেন, নাটোরে করোনা ভাইরাস গড় সংক্রমণের হার প্রায় ২০ শতাংশ। দেশের করোনা ভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ হারে ঝুঁকিপূর্ণ ৩১টি জেলার মধ্যে নাটোর রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, সংক্রমণ প্রতিরোধে পাবলিক প্লেসে নিয়মিত শতভাগ মাস্ক সঠিক নিয়মে পরিধান নিশ্চিত করাসহ কোভিড-১৯ এর স্বাস্থ্যবিধি সবাইকে অনুসরণ করতে হবে। সচেতনতামূলক কর্মসূচীর পাশাপাশি প্রয়োজনে কঠোর অবস্থানে যাবে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক ও জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, নাটোরকে নিরাপদ রাখতে জেলা প্রশাসন মাস্ক পরিধান ও সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি প্রশাসনিক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনও অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহনে চলাচল নিশ্চিত করতে নিয়মিত তদারকি কার্যক্রম শুরু করেছে। একই সাথে জেলা সদরসহ সাতটি উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি রোধের কাংখিত লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার সর্বাতœক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
সভা শেষে জনসাধারণের মাঝে কোভিড-১৯ সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি সংবলিত লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করা হয়। পরে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে শতভাগ মাস্ক নিশ্চিত করতে বিপনীবিতানগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমান রোধে জেলার ৭ উপজেলায় উপজেলা প্রশাসন সচেতনতামুলক লিফলেট ও মাস্ক বিরতণ করেছে। এছাড়া বাগাতিপাড়া উপজেলায় গ্রাম ডাক্তার কল্যান সমিতি করোনা ভাইরাস সতর্কতায় বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করে।