নাটোর অফিস॥
জন্মদিন এলেই কেক কেটে উৎসব পালন করার রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। আর সেই জন্মদিন যদি হয় তরুণ বা কিশোর বয়সী কোন বন্ধুর,তাহলে আনন্দ উৎসবের কোন কমতি থাকেনা। হই হুল্লোর, চিৎকার ,চেচাঁমেচি,গান-বাজনা নিয়মিত বিষয়। কিন্তু এবার দশম শ্রেণীর এক বন্ধুর ১৭ তম জন্মদিন পালন করা হয় ভিন্ন বা ব্যতিক্রমী কায়দায়। সহপাঠি ৬ বন্ধু প্রকাশ্যে সড়কের ধারে আরাফাত হোসেন নামে ওই বন্ধুকে একটি গাছের সাথে বেঁধে শরীরে কাদা,মাটি,আবর্জনা, আটা-ময়দা ও রং মাখিয়ে উল্লাস করে। জন্ম দিনের এই উৎসবকে প্রত্যক্ষদর্শিদের কেউ কেউ বলেছেন সন্ত্রাসী কায়দায় এমন উৎসব করা ঠিক নয়। তবে কেউ কেউ বলেছেন কিছু সময় আনন্দ পাওয়ার জন্য হয়ত ব্যতিক্রমী কায়দায় জন্মদিনের এমন উৎসব করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানাযায়, নাটোরের সিংড়া উপজেলার দমদমা পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্র আরাফাত হোসেন রোববার তার জন্মদিনের কথা জানায় তার ৬ বন্ধু হৃদয়, শাকিল, ইরান, সোহান, মাহিন ও সিহাবকে। আনন্দে উল্লাস করতে তারা আরাফাতের জন্মদিন ভিন্ন আঙ্গিকে করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই উৎসব যেন সামাজিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়,এমন ইচ্ছা নিয়ে ওরা ৭ বন্ধু সিদ্ধান্ত নেয় ব্যতিক্রমী কায়দায় জন্মদিন পালনের। রোববার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে প্রকাশ্যে সড়কের ধারে একটি গাছে আরাফাতকে দড়ি দিয়ে বেধেঁ তার শরীরে ময়দা, ডিম, ময়লা-অবর্জনাসহ রং মাখানো হয়। এসময় আরাফাতকেও আনন্দ করতে দেখা যায়। পথচারীদের কেউ কেউ এ দৃশ্য দেখে মজাপান। কেউ কেউ ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন।এই ব্যতিক্রমী কায়দার উৎসব ভিডিও ধারন করে সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তবে সচেতন নাগরিক ও অভিভাবক মহল বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নেননি ।
ফারহানা ফ্লোরা নামে একজন অভিভাবক জানান, এটা মজা না, সামাজিক অবক্ষয়। এদেরকে এখনই থামাতে হবে।
মাজেদুর রহমান ও মেহেদি হাসান নামে দুজন সচেতন ব্যক্তি বলেন, এমন কর্মকান্ড প্রমাণ করে সুস্থ মস্তিস্কের বড়ই অভাব। এসব নোংরামি বন্ধ করা উচিত।
মানবাধিকার ও গণমাধ্যম কর্মী এনামুল হক বাদশা বলেন,উৎসবের নামে এ ধরনের কর্মকান্ড অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা চরম সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়। এমন কর্মকান্ড থেকে নতুন প্রজন্মকে বিরত থাকতে হবে। তবেই সম্ভব সুন্দর, শিক্ষিত সমাজ গড়ে তোলা।
অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া আরাফাতের ৬ বন্ধু বলেন,তারা মুলত বন্ধুর ১৭ তম জন্মদিনটা স্মরনীয় করে রাখার জন্যই এমন ব্যতিক্রমী কায়দায় পালন করেছেন। কোন বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এমনটি করেননি।