নাটোর অফিস॥
নাটোরের লালপুরে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে বৃৃদ্ধাআঙ্গুল দেখিয়ে অবৈধভাবে তিন ফসলি জমিতে চলছে অবাধে পুুকুর খনন। এই অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধ না হলে স্থায়ীজলাবদ্ধতাসহ কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষিবিদ সহ কৃষকরা। অবাধে পুকুর খননের কারনে শুধু কৃষি জমিই নষ্ট হচ্ছে না, বিরুপ প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর।
উপজেলার কদিমচিলান ইইনয়নের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন,‘ইটভাটায় মাটি দেওয়ার কথা বলে এসব ফসলি জমির মাটি উপজেলার বিভিন্ন ব্যক্তি পর্যায়েও বিক্রি করা হচ্ছে। মাটিবাহি ট্রাক্টরের মোটা ও ভারী চাকায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। ফলে মাঝে মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। উপজেলা প্রশাসন পুুকুর খনন বন্ধে অভিযান চালিয়ে দুই একজন কে অর্থদন্ড করলেও তা কোন কাজে আসছে না। ভ্রাম্যমাণ আদালত এলাকা থেকে চলে আসার পর পরই শুরু হয় পুকুর খনন।’
পুকুর খননকরীরা জানায়,‘লিখিত অনুমতি না থাকলেও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তাদের মৌখিক অনুমতিতে পুকুর খনন করছেন তারা। পুকুর খননকারীদের কাছে বস্তুত অসহায় হয়ে পড়েছে স্থানীয় প্রশাসন । তবে মৌখিক অনুমতির কথা অস্বিকার করে উপজেলা প্রশাসন দাবী করেছে পুকুর খনন বন্ধে অভিযান চালাচ্ছেন তারা। ’
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার প্রতিটি এলাকায় ফসলি জমিতে চলছে পুকুর খনন । এর মধ্যে এবি, দুুয়ারিয়া, কদিমচিলন ও আড়বাব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার একাধিকস্থানে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এই সব এলাকাতে প্রায় ১৫টি স্থানে এক্সেবেটর( ভেকু মেশিন) দিয়ে দুই তিন ফসিল জমিতে চলছে পুকুর খনন। দুয়ারিয়া ইউপির আহম্মেদপুর গ্রামের বিলে প্রায় ৬ বিঘা জমিতে লালন নামের এক ব্যক্তি এক্সেবেটর দিয়ে পুকুর খনন করছে। কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন,‘ আমরা সবাইকে ম্যানেজ করেই পুকুর খনন করছি। সবাই বিষয়টি জানেন। সাংবাদিকরাও জানে। সবার সঙ্গে কথা হয়েছে।’
নাম প্রাকাশ না করা শর্তে এক্সেবেটর চালকরা বলেন,‘পুকুর খননের জন্য কৃষকদের সঙ্গে চুক্তি করেই সকলকে ম্যানেজ করেই পুকুর খনন করছেন তারা। আর এই সব মাটি প্রতি গাড়ি সর্বনি¤œ ৫শ থেকে ৮শ টাকায় বিক্রয় করছেন।’
স্থানীয় হারুন আলীসহ একাধিক কৃষক বলেন,‘বিলের মধ্যে এভাবে পুকুর খনন করায় বিলের পানি নিষ্কাশনের সমস্যা সৃষ্টি হবে। অনেকদিন ধরে বিলে জলাবদ্ধতা হয়ে থাকায় আমার জমিতে ফসল আবাদ করতে পারিনা। যাদের দেখার কথা তারা তো দেখেনা । আমরা কাকে বলবো বলেন..?।
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান,‘কৃষি জমিতে ফসল নষ্ট করে পুকুর খনন আইনবিরোধী। এভাবে পুকুর খনন করায় কৃষি ক্ষেত্রে বিরুপ প্রভাব পরবে বলে তিনি মনে করেন।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাম্মী আক্তার বলেন,‘পুকুর খনন বন্ধে তারা অব্যাহত অভিযান চালাচ্ছেন। আর্থিক জরিমানার সঙ্গে কারাদন্ড ও এক্সেভেটর মেশিনের ব্যাটারি জব্দ করছেন। পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কড়া নির্দেশনা জারি রয়েছে জেলা প্রশাসকের । পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসনের পাশাপশি জনপ্রতিনিধিসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি জানান।