নাটোর: বাড়ির ছোট জামাই। তবে তার নজর বাড়ির বড় মেয়ের দিকে। শঠতা, প্রতারণা ও লালসার কারনে নিভতে বসেছে ওই বাড়ির বড় মেয়ের সংসারপ্রদীপ।
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের ভান্ডারদহ গ্রামে ঘটেছে এমন ঘটনা। দেড় বছর ধরে বোন জামাইয়ের ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। অভিযুক্ত ওই ধর্ষকের নাম শফি মিয়া। মান-সম্মানের ভয়ে মুখ বুজে সহ্য করা ওই গৃহবধূ এখন হারাতে বসেছে স্বামী-সংসার। শফি নিজ ছোট বোনের জামাই হওয়ায় তার সংসার টিকিয়ে রাখতে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার চাইতে পারছে না ওই গৃহবধূর মা-বাবা। ফলে এক সন্তান নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের গন্তব্যে নির্যাতিতা গৃহবধু।
এ ঘটনায় বড়াইগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য থানার এস আই আহসান হাবীবকে দায়িত্ব দিয়েছেন ওসি দীলিপ কুমার দাস।
অভিযোগে ওই গৃহবধূ দাবী করেন, অভিযুক্ত শফি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন উপায়ে কু-প্রস্তাব দিতো। প্রথমদিকে বাধা দিলে শফি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে এবং বিভিন্ন উপায়ে হুমকি দিতে থাকে। তার তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রের ক্ষতি করে দেয়ার হুমকি দেয়। এতোকিছুর পরও বোনজামাই হওয়ায় মানসম্মানের ভয়ে কিছু বলেননি তিনি।
এরই ধারাবাহিকতায় গত দেড় বছর আগে স্বামী বাড়ি না থাকার সুযোগে অভিযুক্ত শফি বেড়া কেটে তার ঘরে অস্ত্রসহ প্রবেশ করে এবং ছেলে ও তার গলায় ছুরি ধরে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করায়। একই সাথে ওই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণও করে। এরপর ওই ধারণকৃত দৃশ্য ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দেড় বছর ধরে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে শফি বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়। গত ১৯শে জুলাই বিয়ের কথা বললে শফি তা অস্বীকার করে এবং আমাকে পিটিয়ে আহত করে চলে যায়। এরপর থেকে সে পালিয়ে আছে। শফিকে পালিয়ে যেতে শফির পিতা মুন্নেস আলী ও ভাই শাহিন মিয়া সহায়তা করে। এ ঘটনা কাউকে না জানাতে তারা দুজন কড়াভাবে শাসায় আমাকে। আর মামলা মোকদ্দমা করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ওইরাতেই ঘটনাটি জানাজানি হয়।এর পর থেকে আরেক মেয়ের সংসার বাঁচানোর জন্য বড় মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনার বিচার চাইতে পারছে না গৃহবধূর বাবা ও মা। সেই সাথে স্বামীও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
ওই গৃহবধূ বলেন, ‘সন্তনসহ মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে আমাকে দিনের পর দিন ব্যবহার করেছে শফি। আমি সম্মানের ভয় সহ্য করে গেছি। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে আমার সাথে। এখন সকলেই আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সন্তান নিয়ে সমাজে এখন হেয় হচ্ছি আমি। আমি বিচার চাই।’
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ দীলিপ কুমার দাস বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পরপরই একজন এসআইকে তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তিনি প্রতিবেদন দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।