নাটোর অফিস ॥
নাটোরে প্রতারনা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে সিরাজুল ইসলাম, আতিকুর রহমান, মনিরুজ্জামান, আরিফুল ইসলাম নয়ন এবং মাহাবুব আলম খান নামে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত এই পাঁচজন নিজেদের একাধারে মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক ও ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নাটোর জেলায় চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। শনিবার দুপুরে ৯৯ কল পেয়ে শহরের হাসপাতাল রোড এলাকার মেমোরি ডায়াগণষ্টিক সেন্টার থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত খুলনার কোতোয়ালি থানার সিরাজুল ইসলাম, খানজাহান থানার আতিকুর রহমান, মুন্সিগঞ্জের গণকপাড়ার মনিরুজ্জামান, ঝালকাঠির নলছিটির রায়পুরের আরিফুল ইসলাম নয়ন ও ঢাকার রামপুরার মাহাবুব আলম খান ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডিটেকটিভ নিউজ সোসাইটি নামের একটি সংঘটনের নামে দির্ঘদিন ভ্রাম্যমান আদালতের নাম করে চাঁদাবাজি করে আসছিল।
মেমোরি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক তৌকির রহমান তনু জানান,শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় একটি গাড়ি নিয়ে পাঁচজন ব্যক্তি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রবেশ করেন। ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডিটেকটিভ নিউজ সোসাইটি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড তাদের গলায় ঝোলানো ছিল। একজন ছিলেন, যার কোনো কার্ড ছিল না। তারা কার্ডবিহীন ওই ব্যক্তিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন এবং এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যাপারে বিভিন্ন আপত্তিকর অভিযোগ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা জানান। তবে কথার এক পর্যায়ে তারা টাকা দাবি করেন এবং টাকা দিলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা না করার ইঙ্গিত দেন। কিন্তু তাদের কথাবার্তা ও আচরণ সন্দেহজনক বলে মনে হলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে সহযোগিতা কামনা করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বিকেলে ঘটনাস্থলে যান এবং ঘটনার বর্ননা শুনে আটক ৫ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেন।
এদিকে এধরনের প্রতারনার শিকার লালপুরের গোপালপুর বাজারের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী আব্দুল কুদ্দুস জানান, গত শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ওই পাঁচজন তার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ভয় দেখিয়ে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায় তারা।
সদর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল মতিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটকরা একটি প্রতারক চক্র। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় কখনো সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী আবার কখনো ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নামে চাঁদাবাজি করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করার পর আদারতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।