চাকুরীতে পুর্নবহালের দাবিতে নাটোরে এক জয়িতা নারীর অবস্থান কর্মসুচী

নাটোর অফিস ॥
চাকুরিতে চাকুরীতে পুর্নবহালসহ বকেয়া বেতন বিল আদায়ের দাবিতে বৃদ্ধা মা ও শিশু কন্যাকে নিয়ে নাটোরে অবস্থান কর্মসুচি পালন করেন বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাকের এক প্রোগাম অর্গানাইজার। বুধবার সকালে নাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসুচি শুরু করেন “ব্র্যাক সামজিক ক্ষমতায়ন কর্মসুচি’র” প্রোগ্রাম অর্গানাইজার ও জয়িতা নারী মরিয়ম খাতুন । এসময় তিনি বলেন, উর্দ্বতন কর্মকর্তার লালসার স্বীকার না হওয়ায় তাকে মিথ্যা আড়াইশ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়। বর্তমানে তিনি বৃদ্ধা মা ও শিশু কন্যা নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। মিথ্যা অপবাদ তুলে নিয়ে তাকে চাকরি ফিরিয়ে দিতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
দিনভর অবস্থান কর্মসুছী পালনকালে মরিয়ম খাতুন বলেন, তিনি স্বামী পরিত্যক্তা তৃনমুল পর্যায়ের দরিদ্র অসহায় নির্যাতিত গৃহহীণ জয়িতা নারী। তিনি ২০১৫ সালে ১ জুন “ব্র্যাক সামজিক ক্ষমতায়ন কর্মসুচি’তে” প্রোগাম অর্গানাইজার পদে নাটোরের সিংড়া উপজেলার বামিহাল ব্র্যাক অফিসে যোগদান করেন। একই বছরের ২৭ মে বদলি হন বাগাতিপাড়া অফিসে। সেখানে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এরই মাঝে হঠাৎ একদিন তৎকালীন জেলা ব্যবস্থাপক আকছেদ আলী অফিসে ঠুকে তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন। এসময় আকছেদ তাকে বলেন, তার মন খুশী করলে চাকরী থাকবে নইলে থাকবেনা বলে চলে আসেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই ঘটনার কিছুদিন পর আড়াইশ’ টাকা মিথ্যা চুরির অপবাদ তুলে আমাকে নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের জবাব দেওয়ার পরও ২০১৬ সালের ২৮ আগষ্ট আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরে দুর্বল কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করে ব্র্যাক প্রদান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাকিল করি এবং ব্র্যাক ন্যায়পালের কাছে চাকুরি পুর্নবহালের জন্য আবেদন করি। বিচার তার প্রতিবেদনে বলেন, মরিয়ম খাতুনের বয়স অল্প এবং সে একজন দক্ষ কর্মী। দুর্বল লিষ্টে যাওযার বয়স হয়নি। এটা ষড়যন্ত্রমুলক দেয়া হয়েছে । আড়াইশ বা ২৫০ টাকা চুরি হয়নাই বলে প্রমানিত হওয়ায় মরিয়ম খাতুন পুনরায় চাকুরিতে বহাল পাবে এবং যাবতীয় পাওনা বুঝে পাবে এবং জেলা ব্যবস্থাপক আকছেদ আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে বিচারক তাকে বলেন বলে মরিয়ম সাংবাদিকদের জানান। কিন্তু দির্ঘদিনেও তাকে চাকরিতে পুর্নবহাল করা হয়নি।উপরুন্তু আমাকে চোর উল্লেখ করে বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিবেদন জমা দেয়া হচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বরে নাটোরের জেলা প্রশাসকের স্বরনাপন্ন হলে সেখানেও আমাকে চোর উল্রেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। আমাকে চাকরিতে পুর্নবহাল না করে বারবার আমাকে চোর অপবাদ দিয়ে সমাজে নিগৃহীত ও হেয় করা হচ্ছে। বর্তমানে আমি আমার শিশু কন্যা ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। মরিয়ম খাতুন তাকে চাকরিতে পুর্নবহাল করা সহ আকছেদ আলীর বিচার দাবী করেন।
বাংলাদেশ উইমেন লিবারেশন সেন্টারের প্রেসিডেন্ট সীমা দত্ত বলেন, স্বামী পরিত্যক্তা তৃনমুল পর্যায়ের দরিদ্র অসহায় নির্যাতিত গৃহহীণ পদক প্রাপ্ত একজন জয়িতা নারীর সাথে যে ধরনের আচন করা হচ্ছে তা কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি সুরাহার জন্য বাংলাদেশ উইমেন লিবারেশন সেন্টার এই জয়িতা নারীর পাশে দাঁড়াবে।
এব্যাপারে বর্তমানে কুমিল্লার ব্র্যাক অফিসে রিজিওনাল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আকছেদ আলীর সাথে এবিষয়ে জানতে তার মোবাইল ফোনে ( ০১৭১৮-৮৫৪৯৭৬) যোগাযোগ করা হয়। তিনি এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন,বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবী করেন। তিনি বলেন,মরিয়ম খাতুনের টাকা চুরির বিষয়টি প্রমানিত। সে সময়ে দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাকে বহিস্কার করা হয় ব্র্যাকের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী। সে ন্যায়পালকে নিয়েও মিথ্যাচার করেছেন। বিচারক তার বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন।
নাটোরের জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, প্রকৃত বিষয় জনতে উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *