নাটোর অফিস ॥
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ৩নং জোনাইল ইউনিয়নের চলমান ধারার পরিবর্তন আনতে চেয়ারম্যান হতে চান আবু হেলাল। ইউনিয়নবাসীকে মাদক, সুদ, ঘুষ, জুয়া, ভূমি দস্যুতা, নারী কেলেঙ্কারী মুক্ত সমাজ উপহার দিতে তার এই চাওয়া। আর চাওয়াকে সামনে রেখে জোর গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতেই তার এই স্বপ্ন।
আবু হেলাল জোনাইল ইউনিয়নের স্বর্ণপদক বিজয়ী সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেনের জেষ্ঠ পুত্র। বাবা শাহাদৎ হোসেন ১৯৮৩ এবং ১৯৯২ সালে দুই মেয়াদে জোনাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮৭ সালে নাটোর জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে স্বর্ণপদক লাভ করেন। আপন চাচা অ্যাডভোকেট মকছেদুর রহমান জোনাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। পরবর্তীতে তিন মেয়াদে উপজেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক। বর্তমানে নাটোর জর্জকোটের এপিপি।
আবু হেলাল জন্মের পর থেকেই পরিবারের রাজনীতি আর বাবার চেয়ারম্যানি দেখে সেভাবেই তিল তিল করে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। ১৪ বছর বয়সে ১৯৮৭ সাথে ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে রাজনৈতিক জীবনের যাত্রা শুরু। জোনাইল সেন্ট লুইস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৩ সালে এসএসসি পাস করে ভর্তি হন বড়াইগ্রাম কলেজে। সেখানে ১৯৯৪ সালে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জিএস পদে নির্বাচন করেন। এরপর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালে আওয়ামী যুবলীগে যোগ দিয়ে যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্ব নিয়ে ২০১২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে আওয়ামীলীগের সদস্যপদ লাভ করে অদ্যাবধি সক্রিয় সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
পারিবারিক জীবনে এক পুত্র সন্তানের জনক আবু হেলাল ২০০০ সালে জোনাইল ইউনিয়নের অপর সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিনের জেষ্ঠ কন্যা নাজমা খাতুনকে বিয়ে করেন। স্ত্রীও রাজনৈতিক পরিবারের হওয়ায় আবু হেলালের সকল কাজে দিয়ে যাচ্ছেন প্রেরণা। ব্যক্তি জীবনে নাজমা খাতুন জোনাইল উচ্চ বিদ্যালয়েল বিএসসি শিক্ষক। শ্বশুর জালাল উদ্দিন জোনাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন এবং ১৯৭২ সালে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালাতে গিয়ে ১৯৯৪ সালে জোনাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্মেলনে বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের উপস্থিতিতে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত বাহিনী হামলা চালায়। পরবর্তীতে তারাই সন্ত্রাস দমন আইনে ৬৬ জনের নামে মামলা করে। মামলায় তৎকালিন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুস সোবহান হারেজকে ১ নম্বর, আবু হেলালকে ১২ নম্বর, তার বাবা ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেনকে ২ নম্বর, ভাই আনিসুর রহমানকে ৬ নম্বর, চাচা সাদেক আলীকে ৯ নম্বর ও শাখায়েত হোসেনকে ১৬ নম্বর এবং চাচাত ভাই জালাল উদ্দিনকে ১১ নম্বর আসামী করে। যে মামলায় দীর্ঘ হয়রানির পরে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত অ্যাডভোকেট শাহারা খাতুনের তত্বাবধানে সকল আসামী নির্দোষ প্রমানিত হয়।
সামাজিক কর্মকান্ডে আবু হেলাল জোনাইল ডিগ্রি কলেজের হিতৈষী দাতা সদস্য হিসেবে গত ১০ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। স্থাণীয় মসজিদ, ক্লাব, সামাজিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন অব্যহত আছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আবু হেলালের বাবা, চাচাসহ পরিবারের সদস্যরা বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি, নাটোর জেলা আওয়ামীলীগের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিক উদ্দিন সরকারের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় কাজ করেছেন। দ্বারিকুশি ইন্দ্রাপাড়ায় শাহাদৎ হোসেনের গ্রামের বাড়িতে একটি ঘরে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রাগার। সেই ঘরে গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়ে আপন চাচা আক্কাস আলী ও প্রতিবেশী চাচা ইউনুস আলী শহীদ হন।
আবু হেলাল ৯০’এর গণ-অভ্যূত্থান, ৯৬’এর ভোট-ভাতের আন্দোলন, ২০০১ সালের বিএনপি-জামায়াত সরকারের নির্যাতন বয়ে বর্তমান বনপাড়া পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি ও মেয়র কেএম জাকির হোসেনের নেতৃত্বে দূর্বার আন্দোলন করেছেন। সর্বশেষ কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধু কণ্যা, মানবতার মা, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত সকল কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ। ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রান ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে ইউনিয়নবাসির সাথে ছিলেন, আছেন, থাকবেন। চলমান সমাজসেবা মূলক কর্মকান্ডের ধারা অব্যহত রাখতে পরিবর্তণের অঙ্গীকার নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের আগামী নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সকলের দোয়া ও আর্শিবাদ কামনা করেছেন।