নাটোর অফিস ॥
আগামী ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে নাটোরের সিংড়া পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর তিনদিন পর ভোট গ্রহণ করা হবে। এখন চলছে প্রার্থীদের শেষ মুর্হুতের প্রচারণা। ১২ টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছে ২৬ হাজার ৭৫৭ জন। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বর্তমান মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস ও বিএনপির তায়জুল ইসলাম এই দুই জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৭ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সিংড়া পৌরসভা আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় প্রশাসনসহ সব মহলের দৃষ্টি গুরুত্বপূর্ন এ পৌরসভার দিকে।
মেয়র পদে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যেকার প্রচারণায় তুঙ্গে আছে জান্নাতুল ফেরদৌসের নৌকা। দলের অভ্যন্তরিন কোন্দল ভুলে সকলেই জান্নাতুল ফেরদৌসের পক্ষে প্রচারনায় রয়েছেন। নৌকার শেষ মুর্হুতের প্রচারণায় মাঠে আছেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, মহিলা যুবলীগ, শ্রমিকলীগ আলাদা আলাদা টিম নিয়ে নৌকার ভোট প্রার্থনা করছেন। গোল-ই আফরোজ সরকারী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি সজীব ইসলাম জুয়েল একঝাঁক ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে নৌকার প্রচারণা চালাচ্ছেন। নৌকার প্রচারণায় মাঠে আছেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কামরুল হাসান কামরান। কামরান নিজেই মেয়র পদে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। নিজে মনোনয়ন না পেলেও এখন দলের স্বার্থে নৌকার প্রচারণা করছেন। উপজেলার মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৩০টি সংগঠনের প্রায় শতাধিক কর্মী নৌকার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। শেষ মুর্হুতের প্রচারণায় প্রতি পাড়া-মহল্লায় গিয়ে নারী ভোটারদের নিয়ে উঠান বৈঠক করছেন প্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস। সব মিলে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রচারণা এখন গণজোয়ারে রুপ নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এই গণজোয়ার ঠিক থাকলে বিপুল ভোটে নৌকার জয় হবে বলে এমন প্রত্যাশা করছেন দলের নেতাকর্মীরা।সাধারন ভোটারও মনে করছেন বিএনপি প্রার্থীর চেয়ে প্রচারনায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস।
অপর দিকে হামলা, বাধা ও নানা জটিলতায় শঙ্কায় রয়েছেন বিএনপি প্রার্থী তায়জুল ইসলাম। দলটি নির্বাচনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মেয়র প্রার্থী তায়জুলের ধানের শীষের তেমন কোন প্রচার প্রচারণা দেখাতে পারেনি। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আওয়ামীলীগ যেভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন সেই তুলনায় বিএনপির প্রচারণায় তেমন গতি দেখাত পারেনি। আওয়ামীলীগ পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে নৌকার নির্বাচনী অফিস ও কমিটি গঠন করে প্রচারণা করছেন। কিন্তু বিএনপির নির্বাচনী অফিস ও কমিটি গঠনের কথা মুখে শোনা গেলেও কোন ওয়ার্ডেই তেমন কোন কার্যক্রম নেই। তবে গত ১৯ জানুয়ারী ধানের শীষের সবচেয়ে বড় প্রচারণা দেখিয়েছে দলটির সহযোগী সংগঠন যুবদল। তবে আওয়ামীলীগের দাবি পৌরসভার বাহিরের ১২টি ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মী এনে এই প্রচারণা করা হয়েছে। সাধারন ভোটারদের অভিমত যুবদলের প্রচারণায় বড় সাফল্য দেখাতে পেরেছে বিএনপি।উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট মজিবুর রহমান মন্টু ও সদস্য সচিব দাউদার মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা মাঠে নেমে ভোট চাইলেও বেশির ভাগ নেতা কর্মীরা হামলা ও বাধার শঙ্কায় পৌর বিএনপি কার্যালয়েই সময় কাটাচ্ছেন। বিএনপি নেতা কর্মীরা কৌশল পরিবর্তন করে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে প্রচারনা চালাচ্ছেন দলের নেতা কর্মী ও সমর্থকরা। বিএনপি প্রার্থী তায়জুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন , যুবদলের বড় ধরনের শোডাউনের পর থেকেই তার সমর্থকদের ওপর হামলা সহ প্রচারনায় বাধাগ্রস্থ হতে হচ্ছে। গত রোববার ৭ নং ওয়ার্ডে প্রচারনা চালাতে গেলে হামলা চালানো হয়। এতে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব দাউদার মাহমুদ ও পৌর ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক মিলন হোসেন আহত হন। এর পরও সুষ্ঠ ভোট হলে তিনি জয়ী হবেন বলে আশা করছেন।
আওয়ামীলীগ প্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বিএনপির অভিযোগকে মিথ্যাচার দাবী করে বলেন,তারা পরাজয় নিশ্চিত জেনে প্রচারনা থেকে দুরে সরে গেছেন।
রির্টানিং অফিসার মোঃ আসলাম বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠ ও সতস্ফুর্তভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্ট্রাইকিং ফোর্স সহ চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থ্য নেয়া হয়েছে। সিংড়া পৌরসভার নির্বাচন সদ্য অনুষ্ঠিত নাটোরের অন্যান্য পৌরসভার মত উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় থাকবে বলে তিনি আশা করছেন।