নাটোর অফিস ॥
নাটোরের নলডাঙ্গায় দুঃস্থ মাতার ভিজিএফ কার্ড করে দেয়ার কথা বলে দিনমজুরের স্ত্রীকে ধর্ষনের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে উপর্যুপুরি ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে ইব্রাহিম দেওয়ান নামে এক আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে। নলডাঙ্গা থানায় অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি ধর্ষণের ভিডিও পুলিশের হাতে আসার পরই অভিযানে নামে পুলিশ। নির্যাতিতা ওই নারী শুক্রবার রাতে তিন জনের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় মামলা করলে অভিযুক্ত আওয়ামীলীগ নেতা ইব্রাহিম দেওয়ান ও তার সহযোগী বকুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপর অভিযুক্ত একই গ্রামের মৃত নূর উদ্দিনের ছেলে রেজাউলকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে। ইব্রাহিম হোসেন উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের বাঁশভাগ গ্রামের সিরাজ দেওয়ানের ছেলে ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক। সহযোগী বকুল হোসেন একই গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে।
নলডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম মৃধা দুই জনকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নির্যাতিতা ওই দিনমজুরের স্ত্রীকে দুঃস্থ মাতার ভিজিএফ কার্ড করে দেয়ার কথা বলে গত বছরের ৩ অক্টোবর বিকেলে নিজ বাড়িতে ডেকে নেন ইব্রাহিম দেওয়ান। এসময় তার দুই সহযোগী বকুল ও রেজাউল মোবাইল ফোনে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও ধারণ করেন। ঘটনাটি যাতে কেউ না জানে সেজন্য ইব্রাহিম দেওয়ান ভয় দেখানো সহ ওই নারীকে নজরদারিতে রাখেন। পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে এবং একপর্যায়ে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলে দুই মাস পর গতকাল শুক্রবার( ৮ জানুয়ারী) রাতে ওই নারী বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় ইব্রাহিম দেওয়ান, বকুল হোসেন ও রেজাউল করিমকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। আজ শনিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হবে। অপর আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।
এদিকে আওয়ামীলীগ নেতা ইব্রাহিম দেওয়ানকে গ্রেফতারের পর স্থানীয়রা তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলেছেন। এলাকাবাসী জানায়, সালিশের নামে প্রতারনা করে অর্থ আদায়সহ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এলাকায় ছিনতাই এবং সুদ ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
পিপরুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান কলিম উদ্দিন জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। ভিজিএফ ও ভিজিডি কার্ড দেওয়ার নামে ইব্র যে নোংরামী করেছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।