নাটোর অফিস ॥
নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের গোয়ালদিঘী তালগাছি গ্রামের চার ফসলি ৩০ বিঘা জমির সোনার মত মাটি কেটে ভাটায় নেওয়া হচ্ছে। করা হচ্ছে পুকুর। এর জন্য আশে পাশের উর্বর অন্য ফসলি জমিগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে অনাবাদি হয়ে পড়বে। ফলে কর্মহীন হয়ে বেকার হয়ে পড়ব আমরা। অনেককেই ভুমিহীন হতে হবে। তিন বেলা খাবার জুটবেনা কারো কারো পরিবারে। না খেয়ে মরতে হবে আমাদের। কথাগুলো বলছিলেন ওই গ্রামের ফেলু মোল্লা, আজমত, তায়েজ উদ্দিন ,সমজান সহ কয়েকজন কৃষক। তারা জানান, ভুমিখোররা চার ফসলি এসব জমির মাটি কেটে ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। এখানে পুকুর হলে এই মাঠের প্রায় দুই হাজার একর জমি স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। অনাবাদি হয়ে পড়বে আমাদের জমিগুলো। যাদের জমি বেশী তাদের কয়েকজন ২০ হাজার টাকা বিঘায় জমিগুলো ভুমি খেকোদের কাছে ভাড়া দিয়েছে। ভুমি খেকোরা ওই সব উর্বর প্রায় ৩০ বিঘা জমির সোনার মত মাটি কেটে নিয়ে যেতে শুরু করেছে। এসব জমি কট নিয়ে অনেকেই চাষবাষ করতেন। তারা এখন বেকার হয়ে পড়বে। এবিষয়ে প্রশাসনের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন জানানো হয়। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন প্রশাসন। স্থানীয় কৃষদের অনেকেই অভিযোগ করেন, সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমিতে পুকুর খননের প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা জানান, এলাকার প্রায় ২ বিঘা খাস জমি সহ ৩০ বিঘা জমিতে পুকুর খনন শুরু করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর শরীফ চৌহান।
ইউপি চেয়ারম্যান ওমর শরীফ চৌহান বলেন, যে সব জমিতে ফসল হয়না আমরা ১৫ জন কৃষক সেগুলো লিজ নিয়েছি। ওই জমি পুকুর খননের প্রস্তুতি নেয়ার সময় জরিমানা করেছে ভ্রাম্যামান আদালত।
সহকারী কমিশনার (ভুমি) রনি খাতুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,সত্যি জমিগুলো তিন থেকে চার ফসলি। এসব জমিতে পুকুর খনন করলে অপুরনীয় ক্ষতি হবে এবং ফসল উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। এলাকার ক্ষতির মুখে পড়া কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা পেয়ে পুকুর খননকারী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর শরীফ চৌহানকে ইটভাটা নিয়ন্ত্রন আইনের ৫(ক) ধারা অনুযায়ী ৫০ হাজার টাকা এবং সোহেল নামে অপর একজনকে মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ৫ (ক) ধারায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া মাটি খনন কাজে ব্যবহৃত এস্কেভিশন ( ভেকু) মেশিনটি জব্দ করা হয়।